ট্রাম্পের শপথ আজ, নির্বাহী আদেশে আসছে বড় পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ২০শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৬:৩৪ অপরাহ্ন
ট্রাম্পের শপথ আজ, নির্বাহী আদেশে আসছে বড় পরিবর্তন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো আজ সোমবার দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটন ডিসিতে আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণের আগে রোববার এক সমাবেশে তিনি জানান, ক্ষমতা নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একাধিক নির্বাহী আদেশ জারি করবেন। ট্রাম্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী, তার নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহার করে অবৈধ অভিবাসীদের গণহারে ফেরত পাঠানো, পরিবেশগত আইন শিথিল করা এবং বৈচিত্র নিশ্চিত করার বিভিন্ন কর্মসূচি বাতিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে তার দল রিপাবলিকান পার্টি।  


ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প আজ ২০০টির বেশি নির্বাহী আদেশ ও অন্যান্য প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বাক্ষর করবেন। এই আদেশগুলো আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক। এছাড়া তিনি কিছু প্রেসিডেন্সিয়াল ঘোষণাও দেবেন, যেগুলো আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক না হলেও প্রশাসনের ভবিষ্যৎ দিক নির্দেশনা নির্ধারণ করবে।  


ট্রাম্প তার পূর্ববর্তী বক্তৃতায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। সরকারি অফিসগুলোতে এফিসিয়েন্সি বিভাগ খোলার নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি তিনি ১৯৬৩ সালে জন এফ কেনেডির গুপ্তহত্যার সব রেকর্ড প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া তিনি সেনাবাহিনীর জন্য আয়রন ডোম মিসাইল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরির নির্দেশ দেবেন এবং সেনাবাহিনী থেকে ডিইআই (বৈচিত্র, ন্যায় ও অন্তর্ভুক্তি) কর্মসূচি বাতিল করার পরিকল্পনা করেছেন।  


একটি বড় বিতর্কিত পদক্ষেপ হিসেবে ট্রাম্প তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নারীদের খেলায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন বলে জানিয়েছেন। শিক্ষাব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অঙ্গরাজ্যগুলোর কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার কথাও তার পরিকল্পনার অংশ।  


অবৈধ অভিবাসীদের গণহারে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, এটি তার প্রশাসনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং লজিস্টিকগত দিক থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হবে। হাজার হাজার অভিবাসীকে ফেরত পাঠাতে কয়েক বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে, যা বাজেটের ওপর উল্লেখযোগ্য চাপ সৃষ্টি করবে।  


ট্রাম্প প্রশাসনের এই পরিকল্পনাগুলো নিয়ে সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা থাকলেও সমালোচকদের দাবি, তার বেশ কিছু সিদ্ধান্ত মানবাধিকার এবং বৈচিত্রের নীতি লঙ্ঘন করতে পারে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  


প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প বিতর্কিত নীতিমালা গ্রহণ করলেও দ্বিতীয় মেয়াদে এই নীতিগুলোর আরও কঠোর বাস্তবায়ন দেখা যেতে পারে। বিশেষ করে অভিবাসন, সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি ভবিষ্যতে বিশ্ব রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।  


বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের এই নির্বাহী আদেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে। তবে এগুলো কতটা কার্যকর হবে এবং কেমন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে, তা সময়ই বলে দেবে।