মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জুগিন্দা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী উজ্জ্বল হোসেনের মরদেহ ১৭ দিন পর দেশে ফেরত এসেছে। মঙ্গলবার দুপুরে নামাজে জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
গত ২০ ডিসেম্বর পরিবারের উপর অভিমান করে মালয়েশিয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন উজ্জ্বল হোসেন। তিনি গাংনীর ধানখোলা ইউনিয়নের জুগিন্দা গ্রামের শাহারুল ইসলামের ছেলে। প্রায় দেড় বছর আগে পারিবারিক সচ্ছলতার জন্য মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান উজ্জ্বল। কিন্তু সেখানে ঠিকমতো কাজ না পাওয়া, কম বেতন এবং শারীরিক পরিশ্রমের চাপে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, উজ্জ্বল মালয়েশিয়ায় কাজের খোঁজে দীর্ঘদিন সংগ্রাম করছিলেন। অবশেষে একটি কোম্পানিতে কাজ পেলেও সেখানে কঠোর পরিশ্রম করেও ঠিকমতো বেতন পাননি। হতাশা থেকে কয়েকবার দেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও পরিবার তাতে সম্মতি দেয়নি। এ নিয়ে পরিবারের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণে তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
উজ্জ্বলের বন্ধুরা জানায়, কাজ শেষে ঘরে ফিরে তারা তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন। বিষয়টি মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে উজ্জ্বলের মরদেহ সোমবার সকালে মালয়েশিয়া থেকে ঢাকা-গামী একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
মেহেরপুরের স্থানীয়রা বলছেন, বিদেশে কর্মসংস্থানের প্রতিকূল পরিস্থিতি এবং পরিবারের চাপ তরুণদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছে। উজ্জ্বলের মতো আরও অনেক প্রবাসী একই ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন।
এ ঘটনা পরিবার এবং সমাজের জন্য একটি সতর্কবার্তা। প্রবাসে অবস্থানরত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সচেতনতা ও সহমর্মিতা প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী। উজ্জ্বলের অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।