কক্সবাজার পৌর এলাকাকে রেডজোন ঘোষণা
মহামারী করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কক্সবাজার পৌর এলাকাকে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে কক্সবাজার পৌর এলাকাকে রেড জোনে অন্তর্ভুক্ত করে শুক্রবার বিকেলে একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার (৬ জুন) থেকে ২০ জুন পর্যন্ত কক্সবাজার পৌর এলাকা লকডাউনের আওতায় থাকবে।
এতে বলা হয়, কোভিড-১৯ সংক্রমণ কার্যকর ও অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমগ্র পৌরসভাকে রেড জোনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। রেড জোনে অন্তর্ভুক্ত এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক বিবেচনায় ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে।
জরুরি এই নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, রেড জোন এলাকায়- সব ধরনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক গণজমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে জনসাধারণ আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ আবাসস্থলে অবস্থান করবেন। ব্যক্তিগত ও গণপরিবহণ বন্ধ থাকবে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যবহনকরী হালকা ও ভারি যানবাহন রাত ৮টার পর থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি গাড়ি চলাচলে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে হবে। অ্যাম্বুলেন্স, রোগী পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিদের (অনডিউটি) পরিবহন, কোভিড ১৯ মোকাবেলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাড়ি এর আওতার বাইরে থাকবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, সব ধরনের দোকান, মার্কেট, বাজার, হাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবল রোববার ও বৃহস্পতিবার কাঁচা বাজার ও মুদি দোকান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ০৪ টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। ওষুধের দোকান এর আওতার বাইরে থাকবে। এছাড়া কোভিড-১৯ মোকাবেলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে খোলা থাকবে। ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ খোলা থাকবে কেবল রোববার ও বৃহস্পতিবার। সব হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও কোভিড-১৯ মোকাবেলায় পরিচালিত ব্যাংকিংসেবা কার্যক্রম লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।
এতে আরও উল্লেখ করা হয়, জরুরি সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচিত সংবাদকর্মীরা রেড জোনে কাজ করার জন্য কক্সবাজার প্রেস ক্লাব থেকে দেওয়া ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় রেড জোনে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীদের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কক্সবাজার সদর কর্তৃক প্রদত্ত ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচয়পত্র গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, সকল প্রকার গণপরিবহন টার্মিনালে রেড জোনের বাইরে স্থানান্তর করতে হবে। প্রকাশ্য স্থানে বা গণজমায়েত করে কোনো প্রকার ত্রাণ, খাদ্য সামগ্রী বা অন্য কোনো পণ্য বিতরণ করা যাবে না।
গত ৬৩ দিনে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবে মোট ৭ হাজার ৩৫১ জনের করোনাভাইরাস টেস্ট করা হয়। এতে ৯৫৮ জনের রিপোর্ট করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে কক্সবাজার জেলার ৮৭৭ জন। এর সর্বোচ্চ আক্রান্ত কক্সবাজার সদর উপজেলায়, ৩৬৪ জন। এছাড়া মহেশখালীতে ৩৪ জন, টেকনাফে ৪১ জন, উখিয়ায় ১১০ জন, রামু ৫৩ জন, চকরিয়ায় ১৮৯ জন, কুতুবদিয়ায় ৩ জন, পেকুয়ায় ৪৭ জন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৩৫ জন করোনা আক্রান্ত।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।