করোনা চিকিৎসায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের অর্জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বুধবার ২৯শে এপ্রিল ২০২০ ০৯:৩১ অপরাহ্ন
করোনা চিকিৎসায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের অর্জন

বরগুনায় করোনা আক্রান্ত রোগীরা একের পর এক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। আর এ বিস্ময়কর অর্জন রয়েছে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের। আজ বুধবার এক দিনেই বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন চারজন করোনা জয় রোগী । এদের মধ্যে একজন ৭০ বছর বয়সীও রয়েছেন।

জয়ীরা হলেন- বরগুনা পৌর সভার কেজীস্কুল রোডের আবুল বাশার (৬৬), সদরের খাকবুনিয়ার আবুল খালেক সিকদার (৭০), মাইঠার আলমগীর (৪৪) ও বামনার মমতাজ বেগম (৪৫)।

এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে আইসোলসনে ভর্তি হওয়া ১১ জন করোনা রোগীর মধ্যে মাত্র ১৬ দিনের ব্যবধানে ৯ জনই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তিনবার ফলোআপ টেস্টে নেগেটিভ আসার পরেই তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে থাকা বাকি দুজন করোনারোগীও সুস্থ হওয়ার পথে বলে জানা গেছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে এখনও কোনো মৃত্যু নেই। জেলার দুটি উপজেলা আমতলী ও বেতাগীতে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের কেহই বরগুনা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা নেননি। তারা চিকিৎসা নিয়েছেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একমাসে করোনা উপসর্গ নিয়ে আসা প্রায় শতাধিক রোগীর চিকিৎসা দিয়েছে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিট। বর্তমানেও চিকিৎসাধীন রয়েছেন দুজন করোনা রোগীসহ করোনা-সন্দিগ্ধ আরো আটজন রোগী।

আজ বুধবার ছাড়পত্র পাওয়া ৭০ বছর বয়সী আবদুল খালেক সিকদার বলেন, তিনি এখন পুরোপুরি সুস্থ। করোনা রোগের কথা হুইননা প্রথম তো ভয় পাইয়াই গেছিলাম। মনে করছিলাম আর বুঝি বাঁচন নাই। বরগুনা হাসপাতালের ডাক্তার আর নার্সরা মিললা আমারে অনেক সাহস দেছে। কইছে দেকপেন আমনের কিছুই অইবে না। আসলেই আমার কিছুই অয় নায়।

করোনা বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একমাত্র চিকিৎসক বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের পুরো দায়িত্ব এখন ডা. মো. কামরুল আজাদের ওপরেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী কোনো চিকিৎসক প্রতি সাত দিন চিকিৎসাসেবা দেওয়ার পর ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা। কিন্তু একমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক হওয়ায় কোয়ারেন্টিনে যাওয়া হচ্ছে না চিকিৎসক কামরুল আজাদের। একমাসেরও বেশি সময় ধরে তিনি টানা চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে ডা. কামরুল আজাদ বলেন, বৃদ্ধ বাবা-মা অসুস্থ স্ত্রী আর ছোট্ট ছেলে শিশুকে রেখে এ কাজে আসতে হয়েছে। পেশাগত দায়িত্ববোধের কারণেই চলে এলাম।

বরগুনা সিভিল সার্জন হুমায়ুন খান শাহীন বলেন, করোনা রোগীদের একের পর এক সুস্থ হওয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ সকল স্বাস্থ্য কর্মীদের আন্তরিক অবদান রয়েছে। করোনার কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকলেও লক্ষণ দেখে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি।

ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব