প্রকাশ: ৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩১
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রায় প্রতিদিন দাম ওঠানামা করলেও তা বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে না। সামান্য মূল্য কমলেও স্বর্ণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং রেকর্ডমূল্যের কারণে এটি তাত্ত্বিকই থেকে যাচ্ছে। এই সপ্তাহে স্বর্ণের দাম ইতিহাসে প্রথমবার ৩৯০০ ডলারের সীমানা ছুঁয়েছে এবং সপ্তাহ শেষের আগেই তা আরও বেড়ে চলেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার বিশ্ববাজারে স্বর্ণের স্পট মার্কেট অস্থির ছিল। সেশনের শুরুতে দাম প্রতি আউন্সে রেকর্ড ৩ হাজার ৯৬৯ দশমিক ৯১ ডলারে পৌঁছায়, পরে কিছুটা কমে ৩ হাজার ৯৫৬ দশমিক ১৯ ডলারে দাঁড়ায়। একই সময়ে ডিসেম্বর ডেলিভারির মার্কিন স্বর্ণের ফিউচার দামের হার ১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে ৩ হাজার ৯৭৬ দশমিক ৩০ ডলারে পৌঁছায়।
২০২৪ সালে স্বর্ণের দাম ২৭ শতাংশ বেড়েছিল, চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ ক্রয়, এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ডের চাহিদা, ডলারের দুর্বলতা এবং ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা মূল কারণ। এই কারণে স্বর্ণকে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সবাই বেশি আকর্ষণ করছে।
বিশ্লেষক টিম ওয়াটারার জানান, কম সুদের পরিবেশে স্বর্ণ সবচেয়ে লাভজনক বিনিয়োগ। এ কারণে সারা বিশ্বে মানুষ স্বর্ণ মজুতের দিকে ঝুঁকছে। বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যবৃদ্ধি প্রতিফলিত হচ্ছে। বাজুসের এক সদস্য বলেন, “বিশ্ববাজারে দাম যেভাবে বাড়ছে বা কমছে, তা দেশের বাজারেও প্রভাব ফেলে।”
আনোয়ার হোসেন, বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ট্যারিফ অ্যান্ড ট্যাক্সেশনের চেয়ারম্যান বলেন, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারণগুলোও দাম বাড়াচ্ছে। আমেরিকার শুল্কনীতি, চীন-ভারত-রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠক, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা—all এসব কারণে ডলারের প্রতি আস্থা কমছে এবং নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বেড়েছে।
সরবরাহ সীমিত হওয়াও দাম বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। খনিতে উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে স্বর্ণের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়াও ফ্রান্সের রাজনৈতিক অস্থিরতা, জাপানের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং মার্কিন সরকারের চলমান অচলাবস্থাও দাম বাড়াতে প্রভাব ফেলছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামনের মাসগুলোতেও বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকতে পারে। বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ এবং দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের দিকে ঝুঁকছে, যা দেশের বাজারেও দামের স্থিতিশীলতা ও বৃদ্ধি প্রভাবিত করবে।