প্রকাশ: ৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৬
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত দৃঢ় অবস্থানে থাকবে এবং কাজে দৃঢ়তা দেখাবে, ততই জনগণের সন্দেহ ধীরে ধীরে দূর হবে। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্বে তিনি এই মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার সকালে সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়।
সাক্ষাৎকারে তাকে প্রশ্ন করা হয়, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে তার আগের সন্দেহ এখনো আছে কি না। জবাবে তারেক রহমান বলেন, আগে যখন তিনি মন্তব্যটি করেছিলেন, তখন সরকার কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেনি। ফলে শুধু তার নয়, বহু মানুষের মনে সংশয় ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. ইউনূস রোডম্যাপ ঘোষণা করে এবং বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার পর সেই সন্দেহ অনেকটাই কেটে গেছে।
তারেক রহমান বলেন, “আমি মনে করি, উনারা যা বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দৃঢ় থাকবেন এবং কাজে যত বেশি দৃঢ় থাকবেন, ততই সন্দেহ চলে যাবে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাজনৈতিকভাবে জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য সরকারের ধারাবাহিক ও সৎ ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, “এটি রাজনৈতিক সম্পর্ক, ব্যক্তিগত নয়। আমরা প্রথম থেকেই চাইছি, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সফল হোক। কারণ এই সরকারের ওপরই নির্ভর করছে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব।”
তিনি বলেন, “আমরা আশা রাখি উনারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবেন। সরকারের কাজ যত ভালোভাবে সম্পন্ন হবে, ততই সম্পর্কের উষ্ণতা বাড়বে।” তারেক রহমানের মতে, সংস্কার এবং নির্বাচনের প্রস্তুতিই বর্তমানে সরকারের মূল কাজ হওয়া উচিত।
দেশ পরিচালনায় অন্তর্বর্তী সরকারের পারফরম্যান্স প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানে একটি অস্থায়ী কাঠামো। এমন বিশাল জনবহুল দেশ পরিচালনা করা সহজ নয়। তাই জনগণের পূর্ণ ম্যান্ডেটসহ শক্তিশালী রাজনৈতিক সরকারের প্রয়োজন।” তিনি স্বীকার করেন, “অন্তর্বর্তী সরকার কিছু ক্ষেত্রে সফল, আবার কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। তবে তারা চেষ্টা করছেন, এবং সেটাই ইতিবাচক দিক।”
এক এগারোর সেনা-সমর্থিত সরকারের প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, “এক এগারোর সরকার ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অসৎ উদ্দেশ্যে পরিচালিত। তারা দেশের রাজনীতি ধ্বংস করতে চেয়েছিল এবং বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা চালিয়েছিল।” তার ভাষায়, “তাদেরই নতুন এক রূপ আমরা পরে ‘ইন দ্য নেম অব ডেমোক্রেসি’ নামে দেখেছি।”
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, বিএনপি চায় অন্তর্বর্তী সরকার দেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে শক্তিশালী করুক এবং জনগণের আস্থা অর্জন করুক। এতে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।