আত্রাইয়ে শীতে বিপর্যস্ত শ্রমজীবী মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই প্রতিনিধি, নওগা:
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৮:৫৮ অপরাহ্ন
আত্রাইয়ে শীতে বিপর্যস্ত শ্রমজীবী মানুষ

নওগাঁর আত্রাইয়ে শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত কয়েকদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই, আর কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমশীতল বাতাস পরিস্থিতিকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে। খেটে খাওয়া শ্রমজীবী, দিনমজুর ও রিকশাচালকদের জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে। সকালে কুয়াশার সাথে বৃষ্টির মতো শিশির ঝরছে, আর তাপমাত্রা আরও নিচে নেমে যাওয়ায় এই দুর্ভোগ বহুগুণে বেড়েছে।  


বৃহস্পতিবার বদলগাছীতে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বুধবার তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, হিমেল বাতাস ও কুয়াশার কারণে শীতের অনুভূতি আরও তীব্র।  


উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের শ্রমজীবী নারী জাহানারা বেগম জানান, খুব ভোরে কাজের জন্য বের হতে হচ্ছে, কিন্তু শীতের কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তবুও পেটের দায়ে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। অন্যদিকে সিএনজি চালক রায়হান জানান, সকালে যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় গাড়ি নিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে।  


রসুলপুর গ্রামের ভ্যান চালক আদিল বলেন, শীতের তীব্রতায় গত পাঁচদিন ধরে ভ্যান চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বাতাস এত তীব্র যে শরীর কাবু হয়ে যাচ্ছে, যাত্রীও কম পাওয়া যাচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষের এই দুরবস্থায় তারা সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তা কামনা করছেন।  


আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে। হিমেল বাতাস ও কুয়াশার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এ অবস্থায় শ্রমজীবী মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সামাজিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে।  


উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল অনেকটা কমে গেছে। বিশেষ করে দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট চরমে পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে সমাজের সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের এগিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি।  


এই অঞ্চলের অধিকাংশ পরিবার জীবিকা নির্বাহের জন্য দিনমজুরির ওপর নির্ভরশীল। শীতের প্রকোপে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের আয় কমে গেছে। বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের কাজে যাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।  


শ্রমজীবী মানুষরা আশাবাদী, শীতের এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা তাদের পাশে দাঁড়াবে। প্রকৃতির এ প্রভাব থেকে উত্তরণের জন্য স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা এবং নানামুখী উদ্যোগ প্রয়োজন।