যান্ত্রিক সমলয় চাষে সময় ও খরচ কমছে জামালপুরের কৃষকদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি- জামালপুর
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২৩শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৮:১৭ অপরাহ্ন
যান্ত্রিক সমলয় চাষে সময় ও খরচ কমছে জামালপুরের কৃষকদের

জামালপুরে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতির সাহায্যে সমলয় চাষাবাদের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। এই পদ্ধতিতে সময়, খরচ এবং পরিশ্রম কমিয়ে কৃষকদের জন্য সুবিধাজনক এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জামালপুর সদরের তিতপল্লাতে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিন্নাত শহীদ পিংকি, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জাকিয়া সুলতানাসহ কৃষি বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তা এবং স্থানীয় কৃষকরা।  


কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, যান্ত্রিক পদ্ধতিতে সমলয় চাষাবাদের ফলে শ্রমিক সংকট এবং সময়ের অপচয় অনেকাংশে কমে যাবে। এতে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে চাষাবাদ আরও সহজ ও দ্রুততর হওয়ার পাশাপাশি ফসল উৎপাদনও বাড়বে। তাই কৃষকদের এই পদ্ধতিতে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।  


জামালপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেছেন, ধান চাষে শ্রমিক সংকট এবং অতিরিক্ত খরচ এড়ানোর জন্য সমলয় চাষ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। সরকারিভাবে কৃষি প্রণোদনার আওতায় আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে বীজতলা তৈরি এবং চারা রোপণের কাজ চলছে। এই পদ্ধতির ফলে কৃষকরা কম সময়ে এবং কম খরচে চাষাবাদ করতে পারছেন।  


সরকারি প্রণোদনার আওতায় যান্ত্রিক চাষাবাদ চালু হওয়ার ফলে কৃষিতে এক নতুন দুয়ার উন্মুক্ত হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন এবং আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহারে তাদের দক্ষতা বাড়ছে। পাশাপাশি ফসল উৎপাদনের খরচ কমিয়ে আয় বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে।  


কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চাষাবাদের প্রতিটি স্তরে যান্ত্রিকীকরণ চালু করা গেলে আগের মতো শ্রমিক সংকট বা সময়ের অপচয় থাকবে না। এমনকি, ফসল উৎপাদনে অতিরিক্ত খরচও অনেকাংশে কমে যাবে। তাই যান্ত্রিক পদ্ধতি জনপ্রিয় করতে সচেতনতা এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমও চালানো হচ্ছে।  


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় কৃষকরা এই নতুন পদ্ধতির কার্যকারিতা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, সময়, শ্রম এবং অর্থ সাশ্রয় হওয়ার পাশাপাশি যান্ত্রিক চাষাবাদের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে কৃষি খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।  


এই পদ্ধতির সফল বাস্তবায়নে সরকার কৃষকদের আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। পাশাপাশি যান্ত্রিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার শেখাতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা বলেছেন, যান্ত্রিকীকরণ এবং সমলয় চাষাবাদ কৃষকদের জীবনযাত্রা সহজ করবে এবং দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।  


জামালপুরে এই উদ্যোগের মাধ্যমে যান্ত্রিক চাষাবাদের সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এই পদ্ধতি কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখবে। ফলে ধীরে ধীরে সারা দেশে এই পদ্ধতির প্রসার ঘটানো হবে।