বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন প্রকাশ করেছেন, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ড বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। পাঁচ-সাততলা বাড়ির মালিকরাও এই সুবিধা নিয়েছেন, যেখানে প্রকৃত প্রয়োজনের্তাদের এই কার্ড পাওয়ার কথা ছিল না।
বুধবার রাজধানীর আর্মি গলফ ক্লাবে 'টিসিবির সঙ্গে ব্যবসা' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ তথ্য জানান। সভায় বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক, বাজারজাতকারী ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
বশিরউদ্দিন বলেন, "টিসিবির এক কোটি ফ্যামিলি কার্ড বিতরণে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। যাচাই করে দেখা গেছে, প্রশাসনে চাকরিজীবী এক ব্যক্তির পরিবারে তিনটি কার্ড ছিল।" তিনি জানান, এভাবে যাচাই করে ইতিমধ্যে ভুয়া ৪০ লাখ কার্ডধারীকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, "৫ আগস্টের আগে টিসিবি ও বাজার ব্যবস্থাপনায় সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য ছিল। এখন আমরা প্রতিযোগিতামূলক বাজার নিশ্চিত করতে কাজ করছি। টিসিবি বছরে ১২-১৪ হাজার কোটি টাকার পণ্য কেনে। এই অর্থ দিয়ে কীভাবে আরও বেশি পণ্য কেনা যায়, তা নিয়ে কাজ চলছে।"
টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফয়সল আজাদ সভায় জানান, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী সংস্থার পণ্য বিক্রির জন্য নতুন ডিলার নিযুক্ত করা হবে। পুরাতন ও নতুন ডিলারদেরকে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হবে। ১ জুলাই থেকে নতুন ডিলারদের মাধ্যমে টিসিবির কাজ শুরু হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, "ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে, তবে বাজারে প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে। রাইস ব্র্যান তেল রপ্তানি বন্ধের কারণে বাজারে তেলের সরবরাহ নিশ্চিত হয়েছে।" তিনি জানান, কিছু পণ্য টিসিবি সরাসরি আমদানি করবে, যাতে বাজার স্থিতিশীল থাকে।
সভায় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বশিরউদ্দিন বলেন, পণ্য সরবরাহকারীদের সঙ্গে লেনদেনে আরও স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা চলছে। তিনি আশ্বাস দেন, টিসিবির কার্যক্রমে গতিশীলতা আনা হবে এবং সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করা হবে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে টিসিবির কার্যক্রমে ব্যাপক সংস্কার করা হয়েছে। ভোক্তাদের কাছে সহজলভ্য করতে সংস্থাটির পণ্য বিক্রি ও বিতরণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হচ্ছে।