সংসদে বিরোধী দল ও ভাবনা: সম্ভাবনার খোঁজে

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: শুক্রবার ৪ঠা অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৪৪ অপরাহ্ন
সংসদে বিরোধী দল ও ভাবনা: সম্ভাবনার খোঁজে

গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা দেশের বাইরে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ধীরে ধীরে প্রশমিত হতে শুরু করেছে। দেশের অধিকার বঞ্চিত জনগণ যখন ফ্যাসিস্ট সরকারের কবল থেকে মুক্তি পেয়েছে, তখন তারা তাদের ন্যায্য দাবী নিয়ে সোচ্চার হয়েছে। যদিও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, তথাপি সাধারণ মানুষের মধ্যে এই রাজনৈতিক কৌশলগুলোর প্রতি আস্থা অনেক কম।


বাংলাদেশে গত ৫২ বছরে গণতন্ত্রের আকাঙ্খা কখনো পূর্ণতা পায়নি। দেশের মানুষ যখন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করছে, তখন বিরোধী দলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকলে সরকার কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠতে পারে, যা দেশের স্বার্থের পরিপন্থী।


অন্তবর্তী সরকারের গঠন একটি মৌলিক বিষয়। এই সরকারের মাধ্যমে রাষ্ট্র সংস্কারসহ ভবিষ্যতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদি অন্তবর্তী সরকার জনগণের আস্থার প্রতিফলন না করে, তবে দেশ আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে। শেখ হাসিনার পলায়ন আওয়ামী লীগের জন্য একটি চরম সংকটের সূচনা করেছে, যা তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে অনিশ্চিত করে তুলেছে।


এদিকে, বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দৃঢ় হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সংসদে বিরোধী দল হিসেবে কারা আসবে? যদি বিএনপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়, তাহলে তারা কীভাবে ফ্যাসিজমের দিকে ধাবিত হবে, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জাতীয় সরকার গঠনের ঘোষণা দিলেও এর রূপরেখা অস্বচ্ছ রয়েছে।


বাংলাদেশের ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আদর্শগত ব্যাপক মতভেদ রয়েছে। জামায়াত ইসলামী ব্যতীত অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর রাজনৈতিক ইতিহাস সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত নয়। ফলে, তাদের একত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সাবেক সংসদের তথাকথিত বিরোধী দল জাতীয় পার্টির জনপ্রিয়তা বর্তমানে নিম্নমুখী।


উপসংহারে, আসন্ন নির্বাচনে শক্তিশালী কোন বিরোধী দল বা জোটের অভাব স্পষ্ট। যদি এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে, তবে ভবিষ্যত সরকার সেচ্ছাচারিতায় অবগুণ্ঠিত হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতন্ত্রের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে শক্তিশালী বিরোধী দলের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য।