প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৫, ১০:৫১
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আরও এক শিক্ষার্থী মৃত্যুবরণ করেছে। নিহত শিক্ষার্থীর নাম আইমান। শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। এর আগে মাহতাব নামের আরও এক শিক্ষার্থী একই দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছিল।
গত ২১ জুলাই উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল ভবনের পাশে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার সময় স্কুলে ক্লাস চলছিল এবং শিক্ষার্থীরা তখনো ভবনের ভেতরেই অবস্থান করছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে আকাশ থেকে ভেঙে পড়া বিমানটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে স্কুল ভবনের একাংশ, যার ফলে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা হতাহত হন।
আইমান সেই দিন মারাত্মক দগ্ধ হয় এবং দ্রুত উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা চলছিল। আইমানের শরীরের প্রায় ৭৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে জীবনযুদ্ধে লড়াই করে গিয়েছে, কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
আইমানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই তার পরিবার, শিক্ষক, সহপাঠী এবং স্থানীয় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা ও পরিবারের প্রার্থনাও তাকে বাঁচাতে পারেনি। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি আরও হৃদয়বিদারক রূপ নিল।
এখন পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে দুই শিক্ষার্থী এবং আরও বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা নিশ্চিত না থাকার অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবক ও সাধারণ মানুষ।
মাইলস্টোন স্কুল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এখনো পুরো ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত কোনো আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেয়নি। বিমান বিধ্বস্তের কারণ, দায়িত্ব নির্ধারণ এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
আইমানের পরিবার চাইছে এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত হোক এবং যেন আর কোনো পরিবার এভাবে সন্তান হারিয়ে না কাঁদে। এই অকাল মৃত্যুর ক্ষত শুকাতে সময় লাগবে পুরো জাতির।