আসন্ন ঈদুল ফিতরের সময় উত্তরের ঘরমুখী যাত্রীদের জন্য ঈদযাত্রা হবে ভোগান্তিমুক্ত এবং স্বস্তিদায়ক। সিরাজগঞ্জের ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর বিভিন্ন উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে এবার ঈদযাত্রা অনেকটাই নির্বিঘ্ন হবে। বিশেষত, যমুনা সেতু পশ্চিম মহাসড়কে ১১টি উড়াল সেতুর মধ্যে ৯টি চালু হওয়ার ফলে যাত্রীদের জন্য সুবিধা আরও বাড়বে। এছাড়া, হাটিকুমরুল ইন্টারচেঞ্জের সার্ভিস সড়কও খুলে দেওয়া হবে, যা যাত্রীদের যাত্রাপথকে আরও সহজ করবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যমুনা সেতু পারাপারের জন্য প্রতি বছর ঈদের সময় বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলে আসে। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়, যা যাত্রীদের জন্য এক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তবে এবার হাইওয়ে পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নেওয়া পদক্ষেপের কারণে আগের মতো তীব্র যানজট হবে না। সড়কের পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখতে সিসি ক্যামেরা এবং ড্রোন ব্যবহার করা হবে, যা যানজটের শঙ্কা কমাবে।
হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, এবার তারা বিশেষভাবে প্রস্তুত রয়েছে। বিশেষত, ফিটনেসবিহীন এবং লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি মহাসড়কে চলতে বাধা দেওয়া হবে, যাতে কোনো ধরনের যানজট তৈরি না হয়। এছাড়া, সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশ এবং হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশও কাজ করবে। এটি নিশ্চিত করবে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তা দ্রুত সমাধান করা যাবে।
ইউনিয়ন পুলিশ এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে সমন্বয় তৈরি হওয়ায় সড়কটি পরিষ্কার রাখা এবং যানজট মোকাবিলা করা অনেক সহজ হবে। হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ জানান, এই ঈদে সড়কে কিছুটা চাপ থাকবে, তবে কোনো ধরনের যানজট হবে না। তিনি আরও বলেন, সড়ক বিভাগের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
যমুনা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল হক পাভেল বলেন, সেতুতে যানজট এড়াতে ১৮টি টোল বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার মধ্যে চারটি বুথ মোটরসাইকেল চলাচলের জন্য বরাদ্দ থাকবে। এছাড়া, সেতুর দুই পাশে রেকার এবং ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রস্তুত থাকবে, যাতে কোনো গাড়ি বিকল হলে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া যায়।
সিরাজগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান সুমেল বলেন, সিরাজগঞ্জের মহাসড়কগুলো আগের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় রয়েছে। সড়কের কয়েকটি স্থানে সংস্কার কাজ চলমান থাকলেও এতে যাত্রীদের জন্য কোনো সমস্যা হবে না। তিনি আশা করেন, আইন মেনে যানবাহন চললে ঈদযাত্রা বেশ সুবিধাজনক হবে।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার (এসপি) ফারুক হোসেন জানান, ঈদের সময় যানজট মুক্ত সড়ক উপহার দেওয়া তাদের প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেন, সড়কের কোথাও যানবাহন দাঁড়াতে দেওয়া হবে না এবং কোনো গাড়ি বিকল হলে তা দ্রুত সরিয়ে মহাসড়ক সচল করা হবে।
সব মিলিয়ে, আসন্ন ঈদুল ফিতরের সময় উত্তরের ঘরমুখী যাত্রীরা নিশ্চিন্তে এবং স্বস্তিতে তাদের বাড়ি ফিরতে পারবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।