রাজধানীর সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা ফেরাতে চালু হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল বাতি। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে শিগগিরই শুরু হবে এই সিগন্যাল ব্যবস্থা। ১৮ কোটি টাকা খরচ করে রাজধানীর ২২টি স্থানে বসানো হবে এসব সিগন্যাল বাতি, যা যানবাহনের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করবে এবং সড়কে শৃঙ্খলা আনতে সাহায্য করবে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এসব সিগন্যালের ৫০ থেকে ১০০ মিটার মধ্যে কোনো গাড়ি থামাতে বা পার্কিং করতে দেওয়া হবে না। এ জন্য ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ছয়টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হবে, যা ঢাকার যানজট সমস্যার সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। রাজধানীর ইনটারকনটিনেন্টাল হোটেলের সামনে পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয়েছে দেশীয় প্রযুক্তির এই সংকেত বাতি।
ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রাজধানীর যানজট নিয়ন্ত্রণে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল বাতি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। পুলিশের কন্ট্রোল বোর্ড থেকে এই সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করা হবে, এবং সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন থাকলে সনাতন পদ্ধতিতেও সিগন্যাল ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। ট্রাফিক পুলিশ অপারেটরকে নির্দেশনা দিয়ে সিগন্যাল পরিবর্তন করতে পারবেন, যা বাস্তবিক অবস্থা অনুযায়ী কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞরা এই সিগন্যাল পদ্ধতি তৈরি করেছেন। বুয়েটের গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হাদিউজ্জামান জানান, যদি সিগন্যাল বাতি নষ্ট হয়ে যায় তবে তা দ্রুত মেরামত করা সম্ভব হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিগন্যাল ব্যবস্থার কার্যকরীতা নিশ্চিত করতে ট্রাফিক ব্যবস্থার আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ জানান, রাজধানীর পুরো ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা আপডেট করা হচ্ছে। গুলশান থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত থাকবে এআই দ্বারা পরিচালিত সিগন্যাল বাতি। প্রাথমিকভাবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে দুটি করে মোট চারটি মোড়ে এসব সিগন্যাল বসানো হবে। ইতিমধ্যে কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বাংলামটর ও ইনটারকনটিনেন্টাল মোড়ের সিগন্যাল ব্যবস্থার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
এই সিগন্যাল ব্যবস্থা রাজধানী ঢাকার যানজট সমস্যা কিছুটা হলেও কমাতে এবং সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।