বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার উদ্যোগ এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তাদের পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এবং সফররত এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসের এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের পরিচালক পাওলা পামপোলিনি।
পাওলা পামপোলিনি জানান, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্য রাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন করে এবং তারা বাংলাদেশের সংস্কার কার্যক্রমে সাহায্য করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, "বার্তা খুব স্পষ্ট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আপনার সঙ্গে আছে। আমরা আপনার সংস্কারকে সমর্থন করতে চাই এবং এই কাজের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল ও প্রযুক্তিগত সহায়তা সরবরাহ করা হবে।"
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে বলে পাম্পালোনি নিশ্চিত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন অনেক দেশকে এমন ধরনের সহযোগিতা প্রদান করেছে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়ক হতে চায়। "আমরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আপনার ভাষণ মনোযোগ দিয়ে শুনেছি এবং আমরা নিশ্চিত যে বাংলাদেশ এখন এমন একটি নেতৃত্বের অধীনে কাজ করছে, যার সঙ্গে আমরা সহযোগিতা করতে চাই," বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থন ও আগ্রহের জন্য তাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি স্মরণ করেন, গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লিয়েনের সঙ্গে তার বৈঠক এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তার প্রতিশ্রুতি।
ইইউ কর্মকর্তারা বাংলাদেশের শ্রম অধিকার সংস্কারের প্রতিশ্রুতি এবং সেগুলির মাধ্যমে আরও বিনিয়োগ আকর্ষণের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ইউরোপীয় ইউনিয়নকে আশ্বস্ত করেছেন যে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে যে কোনো ধরনের লুকোচুরি বা অপসারণ ছাড়া সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
ইইউ কর্মকর্তারা বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য আরও বিনিয়োগের সুযোগ তৈরির আহ্বান জানান এবং জানুয়ারিতে ইউরোপীয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন বলে জানান।
প্রধান উপদেষ্টা নেপাল ও ভারতের সঙ্গে আঞ্চলিক বিদ্যুৎ সংযোগ সম্প্রসারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহায়তা কামনা করেন, এবং বাংলাদেশের তরুণদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বিশেষ করে নারী ফুটবল দলকে অনুপ্রাণিত করতে ইউরোপীয় ফুটবল দল পাঠানোর প্রস্তাব দেন।
বাংলাদেশের উন্নয়ন, সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দৃঢ় সমর্থন দেশের ভবিষ্যৎকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।