প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ১২:২৬
খাগড়াছড়ির পানছড়ি অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যাপক অনিয়ম ও অতিরিক্ত বিলের অভিযোগে সাধারণ গ্রাহকরা অসন্তুষ্ট। মিটার রিডিংয়ের তুলনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বেশি বিল জমা পড়ায় এবং বিদ্যুৎ অফিসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ফাতেমা নগরীর মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অনেকেই টাকার অভাবে বিদ্যুৎ পায়নি। এসব বিষয় নিয়ে জনমনে বিদ্যুৎ অফিসের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ক্ষোভ ও অভিযোগ প্রকাশ পায়।
গত ২০ জুলাই সকালে পানছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের বাইরে অসন্তুষ্ট গ্রাহকরা সমবেত হয়ে ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় তারা মিটার না দেখে অতিরিক্ত বিল প্রদান, অবৈধ সংযোগ, এবং সরকারি কর্মকর্তা মীর চঞ্চল আলীর সহায়তায় হুমকি-ধামকিসহ নানা সমস্যার কথা জানান। বিদ্যুৎ অফিসের অস্থায়ী শ্রমিক মিটার রিডাররা বলছেন, তারা সঠিক রিডিং অফিসে পাঠালেও সেখানে বেশি রিডিং যোগ করা হয়, যা তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
সহকারী প্রকৌশলী মীর চঞ্চল আলী স্বীকার করেন যে অতিরিক্ত বিল করা হয়েছে, যা সিস্টেম লস কমানোর জন্য করা হয়েছে, তবে এ ধরনের কোনো সরকারি নিয়ম নেই। এই অনিয়মের কারণে স্থানীয় এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ গ্রাহকরা আর্থিক ও মানসিক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
মরাটিলা এলাকার স্থানীয়রা জানায়, অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ নিয়ে তারা বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তীব্র সংর্ঘষে লিপ্ত হয়েছেন, যেখানে সহকারী প্রকৌশলী মীর চঞ্চল আলী সহ চারজন আহত হন। নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার সময় হাজার হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ দাবি করা হচ্ছে, যেখানে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বসানোর খরচ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠছে। এই অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে কয়েকজন ব্যক্তির সম্পৃক্ত থাকার কথাও উঠেছে।
অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ার কারণে স্থানীয়রা দীর্ঘদিন থেকে ভোগান্তিতে পড়েছেন। সরকারী নীতিমালা অমান্য করে বিদ্যুৎ অফিস ও সংশ্লিষ্টরা গ্রাহকদের অধিকার হরণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ অফিসের দায়িত্বশীলরা এ নিয়ে মিটিং করছেন, তবে এখনো সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রশাসন ও বিদ্যুৎ অফিসের প্রতি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করা সত্ত্বেও এখনো পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। তারা জানাচ্ছেন, যদি দ্রুত সমস্যা সমাধান না হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনের পথে যাওয়া ছাড়া তাদের কোন বিকল্প থাকবে না। পানছড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহে ন্যায্যতা ফিরিয়ে আনার দাবি তাদের সবচেয়ে বড় দাবি।