গোয়ালন্দে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙন শুরু, কৃষিজমি বিলীন

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, ভাঙনপ্রবণ এলাকার মানুষ নদীর তীরে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন। নদীর গা ঘেঁষে থাকা বসতঘর ও জমিতে পাটের ক্ষেত কেটে দ্রুত সরিয়ে নিচ্ছেন কৃষকরা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক লোকমান সরদার বলেন, “গত তিন-চার দিনে আমার পাঁচ বিঘা জমি পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। হাতে গোনা যে জমিটুকু বাকি আছে, সেটাও যদি চলে যায় তবে নিঃস্ব হয়ে যাব। সরকার যদি দ্রুত বালুভর্তি জিওব্যাগ না ফেলে তাহলে আরও বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।”

একই এলাকার বাসিন্দা মোবারক খাঁ বলেন, “আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। বাড়িটা নদীতে চলে গেলে সন্তানদের নিয়ে কোথায় যাবো, ভাবতেই পারি না। সারারাত ঘুম হয় না। আমরা বাঁচার আশা নিয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে থাকি।”

স্থানীয় সমাজসেবক মো. জামাল মুন্সী বলেন, “প্রতিবার বর্ষা এলেই এই এলাকার মানুষ আতঙ্কে থাকেন। বছর বছর জমি হারাচ্ছি। আমি নিজেও এখন ভাঙনের মুখে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে বারবার জানানো হলেও কার্যকর ব্যবস্থা এখনও দেখা যাচ্ছে না।”

এদিকে রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল আমিন জানান, “আমরা ভাঙনপ্রবণ এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং উচ্চপর্যায়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা চলছে।”

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান বলেন, “আমি এলাকাটি নিজে পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়েছি। আশাকরি দ্রুত জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের কাজ শুরু হবে।”

স্থানীয়দের মতে, প্রতি বছরই নদীভাঙনের কবলে পড়ছে মুন্সিবাজারের অসংখ্য মানুষ। সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।