প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২৫, ১০:৫০
কোনো ট্যাগ পাওয়া যায়নি
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে জাতিসংঘের ত্রাণ ট্রাকের কাছে অপেক্ষমাণ ৬৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। রবিবার (২০ জুলাই) উত্তর গাজার ওই ঘটনাটি এখন পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণের সময় সর্বাধিক প্রাণহানির উদাহরণ হয়ে উঠেছে। আহত হয়েছে আরও ডজন খানেক মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, নিহতদের সবাই ছিলেন বাস্তুচ্যুত, যাদের ত্রাণ সংগ্রহ করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।
ঘটনার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা তাৎক্ষণিক হুমকি ভেবে সতর্কতামূলক গুলি ছুড়েছিল এবং মানবিক সহায়তাকারী ট্রাকের ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো হামলা চালানো হয়নি। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, নিহতের সংখ্যা নিয়ে অতিরঞ্জন করা হয়েছে এবং ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চলছে। তবে এই ব্যাখ্যা আহত ও শোকাহত ফিলিস্তিনিদের ক্ষোভ প্রশমিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এদিকে দক্ষিণ গাজায়ও ইসরায়েলি হামলায় ৬ জন নিহত হয়েছেন, তবে এই বিষয়ে ইসরায়েল এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। জাতিসংঘের খাদ্য সহায়তা সংস্থা ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, ত্রাণ বহনকারী ২৫টি ট্রাক যখন গাজায় পৌঁছায়, তখন হাজারো ক্ষুধার্ত মানুষ তা ঘিরে ফেলেন এবং ঠিক সেই মুহূর্তেই গুলি চালানো হয়। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, “মানবিক সহায়তা গ্রহণকারীদের ওপর সহিংসতা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।”
এই হামলায় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। হামাসের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, খাবারের জন্য জড়ো হওয়া নিরস্ত্র মানুষদের হত্যা যুদ্ধবিরতির আলোচনা ব্যাহত করতে পারে। কাতারে চলমান মধ্যস্থতায় এমন সহিংস ঘটনা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
রবিবার সারাদিন গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলা চালানো হয়। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একদিনেই নিহত হয়েছেন অন্তত ৯০ জন। এ নিয়ে চলমান অভিযানে প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা এবং মানবিক বিপর্যয়ের মাত্রা। অবরুদ্ধ গাজা এখন কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।
গোটা গাজা জুড়ে খাদ্য ও চিকিৎসা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষত জাতিসংঘ ও মানবিক সংস্থাগুলো এ ধরনের হামলা বন্ধ এবং মানবিক করিডোর চালুর জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। তবুও নিরীহ ফিলিস্তিনিদের জীবনের নিরাপত্তা এখনও অধরা থেকে যাচ্ছে।