প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২৫, ১৭:২
নওগাঁ জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, সংগ্রহ, এলাকা পরিবর্তন ও বিভিন্ন সেবার নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার দুপুরে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি টিম। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন উপ-সহকারী পরিচালক মেহবুবা খাতুন রিতা।
তিনি জানান, দুদক প্রথমে ছদ্মবেশে সেবা প্রত্যাশির ভূমিকায় অফিসে প্রবেশ করে। সেখানে দেখা যায়, প্রত্যেক নাগরিকের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে, যা সরকারি ফি এর অতিরিক্ত। অফিসে নগদ টাকা লেনদেনের কোনো নিয়ম না থাকলেও প্রত্যেক সেবা প্রত্যাশির কাছ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছিল।
পরবর্তীতে নির্বাচন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থলে ডেকে এনে নগদ লেনদেনের প্রমাণ দেখানো হয়। সেসময় কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করে দুদক কর্মকর্তারা। তারা জানান, এসব তথ্য ও কাগজ যাচাই-বাছাই করে কমিশনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আব্দুল মোত্তালিব বলেন, অফিসে সরাসরি টাকা লেনদেনের সুযোগ নেই। এনআইডি সংশোধন বা সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফি অনলাইন ব্যাংকিং বা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমা দিয়ে অফিসে আসতে হয়।
তবে দুদকের দাবি অনুযায়ী সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া এবং নগদ লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে, যা নির্বাচন অফিসের দায়িত্ব পালনে স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
স্থানীয়দের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, এনআইডি সংশোধনসহ নানা সেবার জন্য তাদেরকে ঘুষ দিতে হয়েছে, তা না হলে কাজ সময়মতো হয় না। দীর্ঘদিন ধরে এই অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
দুদকের এই অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়ে তারা বলছেন, এই ধরনের অনিয়ম বন্ধে নিয়মিত নজরদারি এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেবার নামে ঘুষবাণিজ্য রোধ না করলে সাধারণ জনগণের হয়রানি বাড়বে।
অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে জানিয়েছে দুদক কর্তৃপক্ষ।