প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১১:১১
রাজবাড়ীর কালুখালীতে নিখোঁজের একদিন পর নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ, যিনি মঙ্গলবার সকালে ভাড়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। নিহত আসলাম প্রামাণিক পাংশা উপজেলার চরলক্ষীপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন।
বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার চাঁদপুর ব্রিজের নিচে চন্দনা নদীতে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি উদ্ধার করে এবং তা ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতের পরিবার জানায়, আসলাম প্রামাণিক এক সময় একটি ইটভাটার ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। ছয় মাস আগে তিনি চাকরি ছেড়ে কিস্তিতে তিন লাখ টাকা দিয়ে একটি নতুন ইজিবাইক কেনেন। সেই যানটি চালিয়ে তিনি পরিবার চালাতেন। মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে তিনি ইজিবাইক নিয়ে বের হন, দুপুরে স্ত্রীর সঙ্গে শেষবার ফোনে কথা হয়।
বিকেল গড়িয়ে গেলেও তিনি বাসায় না ফেরায় সন্ধ্যায় পরিবারের লোকজন তার মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। রাত দশটা পর্যন্ত ফোনে রিং গেলেও কেউ ধরেনি, এরপর ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। পরের দিন সকালে নদীতে লাশ ভেসে উঠলে পরিবারের সদস্যরা তা শনাক্ত করেন।
ভাতিজা আজগর আলী জানান, চাচা নিখোঁজের পর আমরা বিভিন্ন থানা ও হাসপাতালে খোঁজাখুঁজি করেছিলাম, কিন্তু কোনো খবর পাইনি। বুধবার সকালে নদীতে লাশ পাওয়ার সংবাদে সেখানে গিয়ে দেখি সেটি চাচারই দেহ। তবে ইজিবাইকটি এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার দেব্রত সরকার জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছে এবং ইজিবাইকটি ছিনিয়ে নিয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি এ বিষয়ে আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয়দের ধারণা, এটি একটি পরিকল্পিত ছিনতাইয়ের ঘটনা। কারণ, গাড়িটি এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি এবং লাশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ও জড়িতদের শনাক্ত করতে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।