প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ১৮:২১
নোয়াখালীর হাতিয়ার করিমবাজার সংলগ্ন মেঘনা নদীতে ট্রলার ডুবির ঘটনায় দুই দিন অতিবাহিত হলেও নিখোঁজ পুলিশ সদস্য সাইফুল ইসলাম এবং রোহিঙ্গা শিশু মো. তামিমের কোনো খোঁজ মেলেনি। নিখোঁজদের পরিবারের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর কান্নার মূর্ছনা বইছে।
দুর্ঘটনাটি ঘটে গত ৩১ মে শনিবার বিকেলে। ঝড়ো আবহাওয়ার কারণে ট্রলারটি ৩৯ জন যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। ট্রলারে পুলিশ, আনসার সদস্য, রোহিঙ্গা রোগী ও বিভিন্ন এনজিও কর্মকর্তারা ছিলেন। এখন পর্যন্ত ৩৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও দুইজনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ভাসানচর থানার সাব পোস্ট মাস্টার মো. গিয়াস উদ্দিন এবং রোহিঙ্গা নারী হাসিনা খাতুন। তাঁদের মরদেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। নদীর উত্তাল স্রোত এবং বৈরী আবহাওয়া উদ্ধার কাজে বাঁধা সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছেন কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা।
নিখোঁজ সাইফুল ইসলাম লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার চরশাহী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি নোয়াখালী জেলা পুলিশ লাইনসে কর্মরত ছিলেন। তার বাবা-মা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে ছেলের আশায় দিন কাটাচ্ছেন। অন্যদিকে নিখোঁজ শিশু তামিম ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা।
দুর্ঘটনার শিকার ট্রলারটি আলী বাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। যাত্রার কিছুক্ষণ পরই করিমবাজারের কাছাকাছি এসে বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে। হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও বড় ঢেউয়ের তোড়ে ট্রলারটি উল্টে যায়।
হাতিয়া থানার ওসি এ কে এম আজমল হুদা জানান, দুর্ঘটনার পর থেকে উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। নিখোঁজদের খোঁজে কোস্টগার্ড ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে।
স্থানীয়দের অনেকেই বলছেন, নদীপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না হলে এমন দুর্ঘটনা ভবিষ্যতেও ঘটতে পারে। যাত্রীদের জীবন বাঁচাতে ট্রলার চলাচলের ওপর নজরদারি ও আবহাওয়ার সতর্কতা ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি।
এদিকে নিখোঁজদের পরিবারের আহাজারিতে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। তাদের একটাই আকুতি—সন্তানদের যেন জীবিত বা অন্তত মরদেহ ফিরে পাওয়া যায়।