প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ২১:৫৪
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীরা তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে টাকা পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। এসব রেমিট্যান্সের একটি বড় অংশ আসে সৌদি আরব, কুয়েত, ওমানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে। কিন্তু সম্প্রতি কিছু অসাধু প্রতারকচক্র প্রবাসীদের সেই কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিতে শুরু করেছে। তারা মোবাইল অ্যাপস ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে প্রবাসীদের ফাঁদে ফেলছে।
এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে সৌদি আরবের জেদ্দায় কর্মরত প্রবাসী ইব্রাহিম খলিলের সঙ্গে। তিনি ‘কুইক পে’ নামক একটি অ্যাপসের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হন। শুরুতে ব্যাংকের তুলনায় বেশি টাকার অফারে আকৃষ্ট হয়ে তিনি কয়েক দফায় লেনদেন করেন এবং তার বিশ্বাস তৈরি হয়। কিন্তু একপর্যায়ে বড় অঙ্কের টাকা পাঠানোর পর তাকে ব্লক করে দেয় প্রতারকচক্র।
এই প্রতারকচক্র প্রাথমিকভাবে ফেসবুক পেইজ ও সুন্দরী নারীদের মাধ্যমে ভিডিও লাইভে আকর্ষণীয় অফার প্রদর্শন করে। তারা রিয়েল, দিনার বা ডলারের বিনিময়ে প্রতি ইউনিটে ৫ থেকে ৭ টাকা বেশি দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। প্রথমে গ্রাহককে একটি অ্যাপস ইন্সটল করানো হয়, যেখানে বিকাশের মতোই রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হয়। কিছুদিন স্বাভাবিক লেনদেন করার পর তারা বড় অঙ্কের লেনদেনে বেশি মুনাফার অফার দিয়ে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেয়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রতারকচক্রের দেওয়া ট্রেড লাইসেন্স, এনআইডি এবং ঠিকানা সবই জাল। দেবীদ্বার উপজেলার ছোটশালঘর গ্রামের যে ঠিকানা তারা দিয়েছে, সেখানে অনুসন্ধানে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। এমনকি যিনি এনআইডিতে নাম দেওয়া হয়েছে, তিনিও প্রকৃতপক্ষে ওই এলাকায় পরিচিত নন।
এই বিষয়ে দেবীদ্বার সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মোঃ শাখাওয়াত হোসেন জানান, রেমিট্যান্স পাঠানোর নিরাপদ মাধ্যম হচ্ছে ব্যাংক। কিন্তু কিছু প্রবাসী শর্টকাট উপায়ে টাকা পাঠাতে গিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। তিনি বলেন, “প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ আমরা নিরাপদে প্রিয়জনদের কাছে পৌঁছে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
এই প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে প্রবাসীদের আরো সচেতন হতে হবে এবং লোভনীয় অফারের ফাঁদে না পড়ে বৈধ পথে লেনদেনের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও উচিত এই চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া।