প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ২০:০
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় তিন বছর ধরে আদর-যত্নে লালন-পালন করা হয়েছে ‘সুলতান’ নামের এক বিশাল ষাঁড়কে, যার ওজন এখন প্রায় ১৫ মন। গরুটি বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন স্থানীয় খামারি দম্পতি অরিদ আলী ও বেবি খাতুন। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তাদের বাড়িতে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সুলতানের দাম ধরা হয়েছে ১০ লক্ষ টাকা।
দক্ষিণ ধুবনী গ্রামের এই দম্পতি ছোটবেলা থেকেই সুলতানকে সন্তানসম আদরে লালন করে আসছেন। খামারটির টিনসেড ঘরেই ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টি বড় হয়েছে। পরিবারটির সদস্যরা জানান, সুলতান মেজাজি হলেও অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির এবং কেবল নিজেদের পরিবারের লোকজনকেই সয়ে নেয়।
সুলতানকে প্রতিদিন চারশ টাকার মতো খাবার দিতে হয়। তাতে থাকে খৈল, ভুট্টা, ভুষি, ভাত, খড় এবং ঘাস। কৃত্রিম খাবার একেবারেই বাদ। সুলতানকে যখন অপরিচিত কেউ দেখতে আসে, তখন সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। তাকে শান্ত করতে পরিবারের সদস্যদেরই এগিয়ে আসতে হয়।
বেবি খাতুন বলেন, “সুলতান আমার সন্তানের মতো। আমরা অনেক কষ্ট করে ওকে বড় করেছি। কোরবানির ঈদে যদি কেউ সঠিক দাম দেয়, তাহলে মন কাঁদলেও তুলে দেব তার হাতে।” তার স্বামী অরিদ আলী জানান, আরও পাঁচটি গরু রয়েছে তাদের খামারে, তবে সুলতান সবার সেরা।
স্থানীয়দের মতে, এই এলাকার কেউ এর আগে এত বড় ষাঁড় দেখেনি। মানুষ প্রতিদিনই সুলতানকে এক নজর দেখতে আসছে। অনেকেই তার আকার-আকৃতি দেখে বিস্ময় প্রকাশ করছেন। তারা বলছেন, এ গরু সত্যিই হাট কাঁপাবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মাহমুদুল হাসান জানিয়েছেন, অরিদ ও বেবি খাতুন একজন আদর্শ খামারি দম্পতি। তারা শুরু থেকেই প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরামর্শে গরুগুলো লালন-পালন করছেন। সুলতান যেন ভালো দামে বিক্রি হয়, সে জন্য তারা সব ধরনের সহোযোগিতা দিচ্ছেন।
সুলতান শুধু একটি গরু নয়, এটি একটি পরিবারের স্বপ্ন, পরিশ্রম ও ভালোবাসার গল্প। কোরবানির ঈদে এই গরুটি সত্যিই হাট কাঁপাতে পারে – এমনটাই প্রত্যাশা এলাকার মানুষের।