প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ১৮:৩
নোয়াখালী সদরের চরমটুয়া ইউনিয়নে একই পরিবারের দুই কিশোরী বোন অপহরণের ঘটনার ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তাদের উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এই দীর্ঘ সময়েও সন্তানদের খোঁজ না পেয়ে দুশ্চিন্তা আর আতঙ্কে দিন কাটছে পরিবারের সদস্যদের।
গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় চরমটুয়া ইউনিয়নের রামানন্দী গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহরিম হারুন ফালাহ (১৫) ও তার ছোট বোন তাছনুবা হারুন তাহা (১২) নিখোঁজ হন। পরিবারের দাবি, তাদের দু'জনকেই একই সময়ে অপহরণ করে নিয়ে যায় এলাকারই বখাটেরা।
অপহৃত দুই ছাত্রীর মা ফরিদা আক্তার জানান, বড় মেয়ে ফালাহ পানা মিয়া টি.এফ উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল আর ছোট মেয়ে তাহা স্থানীয় মহিলা মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। দীর্ঘদিন ধরেই তার বড় মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল একই ইউনিয়নের সাজ্জাদুর রহমান শাওন। বিষয়টি শাওনের পরিবারকে জানিয়েও কোনও প্রতিকার পাননি তিনি।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বাড়ির বাইরে থাকার সুযোগে শাওন ও তার সহপাঠীরা ঘরে ঢুকে দুই বোনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন ফরিদা আক্তার। আত্মীয়-স্বজনসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে ব্যর্থ হয়ে পরে থানায় অভিযোগ করেন তিনি।
ভিকটিমদের মামা ওয়াহিদুর রহমান অপু জানান, থানায় একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও মেয়েদের হদিস পায়নি পুলিশ। তিনি জানান, পুলিশের সঙ্গে অভিযুক্ত শাওনের পরিবারের বৈঠক হলেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার রাতে থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে শাওনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অপহৃতদের বাবা হারুন অর রশিদ বলেন, তার বড় মেয়ে ছয়টি এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছে এবং পরবর্তী পরীক্ষার প্রস্তুতির মাঝেই অপহরণের শিকার হয়। তিনি পুলিশ প্রশাসনের কাছে দ্রুত তার সন্তানদের সন্ধান ও উদ্ধারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফখরুল ইসলাম জানান, মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রুজু হয়েছে এবং অভিযুক্ত শাওনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ তৎপর রয়েছে এবং তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবারের সদস্যরা আশা করছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত এই অপহরণকৃত দুই বোনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে।