প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ২১:১১
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে থাকা দুটি কৃষ্ণচূড়া গাছ যেন প্রতিদিন নতুন করে আগন্তুকদের স্বাগত জানায়। গ্রীষ্মের খরতাপকে পাশ কাটিয়ে এই দুটি গাছ রঙিন ফুলের শোভায় তৈরি করেছে এক অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য। লাল-কমলা ফুলে সেজে থাকা গাছ দুটি যেন একটি ফুলেল দরজার মতো মনকাড়া আবহ তৈরি করেছে।
শহরে ঢুকতেই পথচারীরা প্রথমেই মুগ্ধ হন এই গাছ দুটির সৌন্দর্যে। বিশেষ করে যারা নতুন করে নেছারাবাদে প্রবেশ করেন, তারা থমকে দাঁড়িয়ে মোবাইলে বন্দি করেন এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। বিকেলের পর থেকেই গাছের নিচে ভিড় করেন তরুণ-তরুণীরা। কেউ ছবি তোলেন, কেউ হাঁটেন আর কেউবা ছায়ায় বসে প্রকৃতির সান্নিধ্যে হারিয়ে যান।
এই গাছ দুটির বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া, যা সাধারণত কৃষ্ণচূড়া নামে পরিচিত। বাংলাদেশে গ্রীষ্মের অন্যতম জনপ্রিয় ফুল এটি। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত এ গাছ ফুলে ফুলে সেজে ওঠে। এ গাছ ৩০ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয় এবং ছায়া দেওয়ার জন্যও খুব উপযোগী।
পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, কৃষ্ণচূড়া গাছ শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, বরং এটি পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শহরের তাপমাত্রা কমানো, বায়ু বিশুদ্ধকরণ এবং সবুজ পরিবেশ গঠনে এই গাছ অপরিহার্য।
স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, গাছ দুটি যেন শহরের প্রাকৃতিক গেটওয়ে হয়ে উঠেছে। দূর থেকে কেউ এলেই প্রথমেই এ গাছ দুটি চোখে পড়ে। তাদের সৌন্দর্য আমাদের মন ছুঁয়ে যায়।
নেছারাবাদে অফিসিয়াল কাজে আসা তরিকুল ইসলাম বলেন, এ গাছ দুটিকে দেখে মনে হয় যেন প্রকৃতি নিজ হাতে সাজিয়েছে আমাদের শহরের প্রবেশপথ। এটি শুধু একটি গাছ নয়, বরং আমাদের শহরের আত্মপরিচয়ের অংশ হয়ে গেছে।
প্রতিদিন বিকেলে ঘুরতে আসা রিমা আক্তার বলেন, এখানে এলেই মনের শান্তি পাই। ফুলের রঙ, গাছের ছায়া, পাশের নদীর বাতাস – সব মিলিয়ে এক শান্তির আবেশ তৈরি করে।
স্থানীয়রা বলছেন, এই গাছ দুটি এখন এলাকার অহংকার। তাই এই গাছের মতোই আরো গাছ রোপণ এবং রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি। তারা চান ভবিষ্যতেও এই গাছের সৌন্দর্য অক্ষুণ্ন থাকুক এবং নতুন প্রজন্মের জন্য এ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য টিকে থাকুক।