প্রকাশ: ৭ মে ২০২৫, ১৭:৩১
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে শহীদ সাগর আহমেদের লাশ উত্তোলনের সরকারি উদ্যোগে বাধা দিলেন তার পরিবার। বুধবার সকালে আদালতের নির্দেশে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এহসানুল হক শিপনের নেতৃত্বে একটি টিম কবর থেকে সাগরের মরদেহ উত্তোলনে যান। কিন্তু পরিবার তাতে কঠোর আপত্তি জানালে অভিযান স্থগিত করা হয়।
সকাল ১১টার দিকে নারুয়া ইউনিয়নের টাকাপোড়া গ্রামে সাগরের কবরস্থানে পৌঁছায় টিমটি। আদালতের নির্দেশে পুলিশের উপস্থিতিতে প্রক্রিয়া শুরু হলেও সাগরের বাবা তোফাজ্জল হোসেন কবর খোঁড়ার আগেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরিবারের সদস্যরা দাবি করেন, দীর্ঘদিন পর লাশ উত্তোলনে তারা রাজি নন এবং এই প্রক্রিয়ায় তাদের সন্তানের প্রতি অসম্মান হবে।
ম্যাজিস্ট্রেট শিপন জানান, আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে তারা পুরো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু পরিবারের আবেগের প্রতি সম্মান জানিয়ে তারা আর লাশ উত্তোলন করেননি। সাগরের বাবার কাছ থেকে লিখিত অনুরোধ নিয়ে বিষয়টি আদালতে জানানো হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাশেদুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশ ছিল ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন। তবে পরিবার সম্মতি না দেওয়ায় তারা ফিরে গেছেন এবং পরবর্তী নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করবেন।
সাগরের বাবা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ছেলে হত্যার বিচার তিনি চান, কিন্তু সন্তানের দেহ আর ছুঁড়ে দেখা তার পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি বলেন, কবর খুঁড়তে হলে আগে তাকেও কবর দিতে হবে।
বাদী সাইফুল ইসলাম জানান, সাগরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, এই সত্য সারা দেশ জানে। তারা মনে করেন নতুন করে ময়নাতদন্তে কিছু বদলাবে না, বরং এটি পরিবারের জন্য মানসিক যন্ত্রণার।
গত বছরের ১৯ জুলাই মিরপুর গোলচত্ত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত হন সাগর আহমেদ। ২০ জুলাই তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। এ ঘটনার প্রায় ছয় মাস পর এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মামলা করেন সাগরের চাচাতো ভাই।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের নির্দেশ আসে আদালত থেকে। কিন্তু পরিবার বলছে, এখন সাগরের লাশ নয়, তার জীবনের মূল্যবোধ এবং মৃত্যুর কারণেই বিচার হোক।