প্রকাশ: ৭ মে ২০২৫, ১৭:২৭
খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্ত এলাকায় ভোরের নিস্তব্ধতা ভেঙে বুধবার সকালেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে অবৈধ অনুপ্রবেশ। ভোররাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সক্রিয় তৎপরতায় মাটিরাঙা ও পানছড়ির বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে আটক করা হয় ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিককে। তারা বাংলাদেশের সীমান্ত অতিক্রম করে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছিল বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মাটিরাঙার তাইন্দং সীমান্ত দিয়ে ১৫ জন, গোমতি ইউনিয়নের শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন এবং পানছড়ির লোগাং ইউনিয়নের রুপসেন পাড়া সীমান্ত দিয়ে আরও ২৪ জন বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে শান্তিপুরে আটক ২৭ জন হাজীপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয়দের তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবির একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
আটকদের মধ্যে যারা শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে তারা নিজেদের গুজরাটের বাসিন্দা বলে দাবি করে। তারা জানায়, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা তাদের বিমানে করে সীমান্তবর্তী এলাকায় এনে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। বিষয়টি নিয়ে সীমান্তে নতুন করে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
আটক ভারতীয় নাগরিকরা বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারায় স্থানীয়দের সাথে সহজেই মিশে গিয়েছিল বলে জানা যায়। বাকিদের পরিচয় এখনো স্পষ্ট নয়। তবে প্রশাসন বলছে, তাদের জাতীয়তা ও পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে এবং সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এই মুহূর্তে ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিক বিজিবির হেফাজতে রয়েছে এবং আমরা দ্রুত তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশ একযোগে কাজ করছে যেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় মাঝে মাঝেই অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে থাকে, তবে এবারের ঘটনা সংখ্যার দিক থেকে ব্যতিক্রম। প্রশাসনের তৎপরতায় পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সীমান্তে নজরদারি আরও বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, তদন্ত ও কূটনৈতিক পর্যায়ে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আটক ব্যক্তিদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তবে সীমান্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আরও কঠোর পদক্ষেপের কথা ভাবছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ ধরনের অনুপ্রবেশের ঘটনা ভবিষ্যতে রোধে স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং জনগণের মধ্যে সমন্বয় আরও জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।