নোয়াখালীতে আদালতের আদেশ অমান্য করে বিএনপি নেতার অবৈধ দালান নির্মাণ

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিরোধপূর্ণ জমিতে পাকা দালান নির্মাণ করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা মো. নুর উদ্দিন। গত ১৮ মার্চ নোয়াখালী সদর আদালতের সহকারী জজ নিশি আক্তার জমিতে কোনো নির্মাণ না করার আদেশ দিলেও তা অমান্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

কবিরহাট থানার উপপরিদর্শক বিপ্লব বড়ুয়ার দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আদালতের আদেশ লঙ্ঘন করে নুর উদ্দিন নলুয়া মৌজার ২৬০১/৯০ দাগের জমিতে নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ৫ এপ্রিল তদন্তে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে ইতিমধ্যেই দালানের ছাদের ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। দরজা-জানালা বসানোসহ ইলেকট্রিকের কাজ চলমান রয়েছে। নির্মাণ শ্রমিকরা জানান, থানার সতর্কতা সত্ত্বেও নুর উদ্দিন তাদের কাজ চালিয়ে যেতে বলেছেন।

জমির বৈধ মালিক মো. সামছুল হক দাবি করেন, ১৯৯০ সাল থেকে তিনি জমিটি ভোগদখল করে আসছেন। ২০১৮ সালে নুর উদ্দিন অকারণে জমি দখলের চেষ্টা করেন এবং ফসল নষ্ট করেন। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।

নুর উদ্দিন তার প্রতিক্রিয়ায় দাবি করেন, "আমার পাঁচটি রায় ডিক্রি আছে। ওনারা শুধু খতিয়ানে মালিক।" তবে তিনি আদালতের আদেশ অমান্যের বিষয়টি নাকচ করেন।

কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহিন মিয়া জানান, আদালতকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ক্ষমতাবান ব্যক্তিরা প্রায়ই এভাবে আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে অবৈধ নির্মাণ করে থাকেন। তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এদিকে বিএনপির স্থানীয় নেতৃত্ব এ ঘটনায় নুর উদ্দিনের ভূমিকা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তারা বলেছেন, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হলে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদালতের আদেশ লঙ্ঘন একটি গুরুতর অপরাধ। এর জন্য সর্বোচ্চ ৬ মাসের কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।