প্রকাশ: ৬ মে ২০২৫, ১৯:৪২
মাদারীপুরের শিরখাড়া ইউনিয়নের আলমমীরের কান্দি এলাকায় শতবর্ষী একটি বটগাছ কেটে ফেলার ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় মুসল্লী ও আলেম সমাজের কিছু প্রতিনিধি গাছটির গোড়ায় পূজার আয়োজন, শিন্নি দেওয়া এবং কাপড় প্যাঁচানোর মতো কর্মকাণ্ডকে ‘শিরক’ আখ্যা দিয়ে গাছটি কেটে ফেলার উদ্যোগ নেন।
জানা গেছে, গত সোমবার সকালে কুমার নদের পাড়ে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী বটগাছটি কাটার কাজ শুরু হয়। গাছের ডাল-পালা প্রায় পুরোটাই কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে গোড়া কাটার প্রস্তুতি চলছে। স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা বলেন, অনেকেই বটগাছকে দেবতা মনে করে পূজা করে, যা ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী শিরক এবং নিষিদ্ধ। এজন্যই তাঁরা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বটগাছটি প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া এবং স্থানীয় সত্তার হাওলাদারের জমিতে অবস্থিত। এই গাছকে ঘিরে স্থানীয় জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে একটি ধর্মীয় ও কৌতূহলী বিশ্বাস গড়ে উঠেছে। অনেকে গাছটির ছায়ায় বিশ্রাম নিতেন, আবার কেউ কেউ রোগমুক্তির আশায় মানত করতেন।
বিশেষ করে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এই গাছের নিচে ফুল, মোমবাতি, আগরবাতি দিয়ে পূজা করতেন। তাদের বিশ্বাস, গাছের ভেতরে একটি রহস্যময় সাপ বাস করে, যা পূর্ণিমা ও অমাবস্যার রাতে দেখা যায়। যদিও এ নিয়ে কোনও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি বলে স্থানীয়রা জানান।
বটগাছ কাটার বিষয়ে জেলা বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বটগাছ একটি সংরক্ষিত প্রজাতির বৃক্ষ। একে কাটার কোনো অনুমতি নেই। এটি শুধু পরিবেশের জন্য নয়, অনেক পাখির জন্যও আশ্রয় ও খাদ্যের উৎস। এমন গাছগুলো সংরক্ষণের জন্য বন বিভাগ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ কাটা বন্ধ করেছি। স্থানীয় যারা এই কাজের উদ্যোগ নিয়েছেন, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আপাতত গাছটির গোড়া রক্ষা পেয়েছে।