কক্সবাজারের সীমান্তবর্তী নাফ নদে আবারও নিরাপত্তা সংকটের চিত্র উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার সকালে টেকনাফের দমদমিয়া সংলগ্ন লাল দ্বীপ এলাকায় মাছ ধরতে গিয়ে চারজন জেলে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) হাতে অপহরণের শিকার হন। জেলেরা হলেন আরাফাত উল্লাহ, আনিস উল্লাহ, মো. জাবের ও আনোয়ার সাদেক, যাদের সবার বাড়ি টেকনাফের জাদিমুড়া ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো জেলেরা ড্রামের তৈরি ভেলায় করে নদীতে মাছ ধরতে যান। সেই সময় মিয়ানমারের দিক থেকে আসা আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নিয়ে যায়। উপস্থিত আরও কয়েকজন জেলে আতঙ্কে নদী থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হলেও বাকি চারজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
জাদিমুড়া ক্যাম্পের মাঝি মোহাম্মদ নুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিয়মিতভাবে নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা এখন আর নিরাপদ বোধ করছে না। আগে থেকেই আরাকান আর্মির হুমকি থাকলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা যায়নি।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা ঘটনাটি সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন এবং বিস্তারিত খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহসান উদ্দিন জানান, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রায়ই এমন অপহরণের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু সরকারিভাবে সেগুলোর স্থায়ী সমাধান মেলে না। সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে জেলেদের নিরাপত্তা জোরদারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
জেলে মোহাম্মদ আলম বলেন, আরাকান আর্মির ভয়ে তারা দিনরাত আতঙ্কে থাকেন। মাঝেমধ্যেই তারা নদী থেকে জেলেদের ধরে নিয়ে যায়, আবার মুক্তিপণের বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। এতে তারা আর স্বাভাবিকভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারছেন না।
প্রতিনিয়ত এমন হুমকির মুখে থাকা সীমান্ত অঞ্চলের জেলেরা এখন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছেন, যাতে তারা নিরাপদে নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারেন।