রাজধানীর পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত এক শ্রমিক সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জামায়াত ক্ষমতায় এলে নারীরা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় কর্মক্ষেত্রে আরও নিরাপদ থাকবে এবং তারা যোগ্যতা ও সম্মান নিয়ে কাজ করতে পারবে। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি দেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, জীবিকা ও নিরাপত্তা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশই শ্রমজীবী মানুষ। তাদের অবদান ও অধিকারকে উপেক্ষা করে দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
জামায়াত আমির অভিযোগ করেন, শ্রমিকদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না, বরং তারা বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও অধিকারবঞ্চনার শিকার হন। একইসঙ্গে শ্রমজীবীদের ওপর নানা রকম চাঁদাবাজির চাপও রয়েছে, যা শ্রমিক সমাজকে আরও দুর্বল করে তোলে।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকরা অতি কম পারিশ্রমিকে কাজ করছেন, যা দিয়ে তাদের দৈনন্দিন খরচ মেটানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে অতিরিক্ত কাজ বা ওভারটাইম করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এই অমানবিক পরিস্থিতির অবসান ঘটানো দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নারী শ্রমিকদের প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠানে পুরুষদের জন্য নামাজসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক সুযোগ-সুবিধা থাকলেও নারীদের জন্য তা নেই। তিনি নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে ভালোবাসা ও সহযোগিতার ভিত্তিতে শ্রমিক ও মালিক উভয়ের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। দায়িত্ববান ও মানবিক আচরণই পারে দেশের উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে।
শ্রমিকবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শ্রমিকের স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপত্তা এবং ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে সরকারকে আরও আন্তরিক হতে হবে।
তিনি বলেন, বৈষম্য দূর করে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করাই একটি উন্নত রাষ্ট্রের প্রধান ভিত্তি, আর সে লক্ষ্যেই কাজ করছে জামায়াতে ইসলামী।