কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সাত দিনের অধিক সময় ধরে দুই দেশের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে, যা কার্যত এক যুদ্ধাবস্থায় পরিণত হয়েছে। ভারত ও পাকিস্তান একে অপরকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিচ্ছে, এবং এই পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে চীন, যা পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা এসেছে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে নিযুক্ত চীনা কনসাল জেনারেল ঝাও শিরেন বলেছেন, চীন সব সময়ে পাকিস্তানের পাশে থাকবে, তবে যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই কূটনৈতিক পথে শান্তির রাস্তা খুঁজে বের করতে হবে। ঝাও এ কথা বলেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কেন্দ্রীয় পাঞ্জাব শাখার নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে।
এ বৈঠকে চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়। ঝাও জানান, চীন এবং পাকিস্তানের সম্পর্ক কৌশলগত সহযোগিতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তা অবকাঠামোর ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, চীন পাকিস্তানের পাশে ছিল, আছে, এবং ভবিষ্যতেও থাকবে, বিশেষ করে নিরাপত্তা, কৌশলগত সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে। চীন-পাকিস্তান সম্পর্কের শিকড় গভীরভাবে গাঁথা, এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে একে অপরের প্রতি গভীর ভালোবাসা ও সম্মান বিদ্যমান, এমন মন্তব্য করেন ঝাও।
এই বৈঠকে, দুই পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার ওপর জোর দিয়েছে, পাশাপাশি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য বহুপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছে। পাকিস্তান ও চীনের সম্পর্কের ভবিষ্যত সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হওয়ার পাশাপাশি এই সম্পর্কের গভীরতা এবং দৃঢ়তা আরও দৃঢ় হয়েছে। ঝাও বলেন, পাকিস্তান শুধু একটি প্রতিবেশী দেশ নয়, বরং চীনের কাছে এক পরীক্ষিত বন্ধু, এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও কৌশলগত সহযোগিতা তাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি।
এই সময়ে, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে চীনের আগ্রহ এবং সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। দুই দেশ নিজেদের সম্পর্কের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারিত করতে চীন এবং পাকিস্তান একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।