কুমিল্লার লাকসাম ও মনোহরগঞ্জে বিএনপির ওয়ার্ড কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকাল থেকে লাকসাম উপজেলার আজগরা এবং মনোহরগঞ্জের বাইশগাঁও ও নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নে পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকাগুলোর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং নির্বাচনী পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
লাকসাম উপজেলা আজগরা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। কেন্দ্রীয় বিএনপির শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম ও সাবেক সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) আনোরুল আজিমের অনুসারীদের মধ্যে ভোটাভুটির সময় বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এই সংঘর্ষে যুবদল ও ছাত্রদলের ৬/৭ নেতাকর্মী আহত হন এবং তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সংঘর্ষের মাঝেই ওয়ার্ড কমিটি ঘোষণা হলেও এলাকাবাসী আতঙ্কে রয়েছে।
অপরদিকে, মনোহরগঞ্জ উপজেলার বাইশগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলনেও একই ধরনের সংঘর্ষ ঘটে। সেখানে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন সুলতান আহমেদ এবং হোসাইন মোহাম্মদ হেলাল। ভোটাভুটির সময় তাদের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে এবং এতে ৪ জন গুরুতর আহত হন। আহতরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং বাইশগাঁও এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এছাড়া, নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের কান্দি স্কুল মাঠে ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কাউন্সিলে আবুল কালাম ও আনোরুল আজিমের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে প্রায় ১০ নেতাকর্মী আহত হন। এই ঘটনায় এলাকার নেতারা কাউন্সিল অসমাপ্ত রেখেই স্থান ত্যাগ করেন। পরিস্থিতি তখন আরও জটিল হয়ে পড়ে।
স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, সংঘর্ষের ঘটনায় হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। লাকসাম উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলম বলেন, আজগরা স্কুল মাঠে সংঘর্ষের ঘটনার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। তবে বাইশগাঁও ও নাথেরপেটুয়া ইউনিয়নের পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। বিএনপির নেতাকর্মীরা এই ধরনের সংঘর্ষের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, দলীয় অমিল ও বিরোধের কারণে এই ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা বাড়ছে, যা দলের ভিতর উত্তেজনা সৃষ্টি করছে এবং রাজনৈতিক পরিবেশকে অস্থিতিশীল করছে।