কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের কেবলকৃষ্ণ এলাকায় ব্রিজের মুখে মাটি ভরাট করে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে করে ওই এলাকার শত শত একর আবাদি জমি ও বসতবাড়ি জলাবদ্ধতার ঝুঁকিতে পড়েছে। এ বিষয়ে স্থানীয় ভূক্তভোগী শুকুর আলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কেবলকৃষ্ণ এলাকায় একটি ব্রিজ দীর্ঘদিন ধরে বন্যা ও বৃষ্টির পানি নিস্কাশনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। ব্রিজটির পশ্চিম পাশে শুকুর আলীর একটি পুকুর ও কিছু জমি রয়েছে। জনস্বার্থে এবং পানি চলাচলের সুবিধার্থে তিনি তিন শতক জমি ছেড়ে দেন যাতে পানি চলাচলে কোনো সমস্যা না হয়। তবে সম্প্রতি একই এলাকার নাগদাহ গ্রামের গোলাপ উদ্দিনের ছেলে রুহুল আমীন তার জমিতে মাটি ভরাট করে একটি পাড় নির্মাণ করেন। এতে ব্রিজের প্রবেশমুখ প্রায় বন্ধ হয়ে যায় এবং স্বাভাবিক পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়।
শুকুর আলী জানান, পানি চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেলে বর্ষা মৌসুমে পানি জমে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এতে শুধু তার নয়, আশপাশের শত শত একর ফসলি জমির ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে ব্রিজসংলগ্ন বেশ কয়েকটি বসতবাড়িও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তিনি বলেন, “আমি নিজের জমি ছেড়ে দিয়েছিলাম যেন সবাই উপকৃত হয়। এখন আরেকজন নিজের সুবিধার জন্য জনস্বার্থকে উপেক্ষা করছে, যা ঠিক নয়।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রুহুল আমীন বলেন, “আমি আমার জায়গায় মাছ চাষের জন্য পাড় তুলেছি। কারও ক্ষতির উদ্দেশ্যে কিছু করিনি।”
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, রুহুল আমীন মাটি ফেলে শুধু তার জমির নয়, পাশের সরকারি ব্রিজের পানি চলাচলের পথও আংশিক বন্ধ করে দিয়েছেন, যা পুরো এলাকার জন্য হুমকিস্বরূপ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নয়ন কুমার সাহা বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়, তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
স্থানীয় কৃষক ও বাসিন্দারা জানান, আগে এই ব্রিজ দিয়ে বর্ষার পানি সহজেই পার হয়ে যেত। এখন ব্রিজের এক পাশ বন্ধ হয়ে গেলে যে কোনো সময় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে।
এলাকাবাসীর দাবি, জনস্বার্থে দ্রুত ওই ব্রিজের মুখ থেকে মাটি সরিয়ে পানি চলাচল স্বাভাবিক করা হোক। পাশাপাশি যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অবৈধভাবে পানি প্রবাহ বন্ধ করতে না পারে, তার জন্য প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো হোক।