পিরোজপুর এলজিইডি অফিসে দুর্নীতির অভিযোগে জেলা হিসাব রক্ষণ অফিস ও এলজিইডি’র পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার রাতেই তাদের গ্রেফতার করে থানায় নেওয়া হয় এবং বর্তমানে তারা পিরোজপুর সদর থানা হেফাজতে রয়েছেন।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন পিরোজপুর ডিস্ট্রিক্ট অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার মোঃ মোহাসীন, এসএএস সুপার মোঃ মাসুম হাওলাদার ও নজরুল ইসলাম, সাবেক ডিস্ট্রিক্ট অ্যাকাউন্টস অফিসার মোঃ আলমগীর হাসান এবং এলজিইডি অফিসের হিসাবরক্ষক একেএম মোজাম্মেল হক খান।
দুদকের পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম মঙ্গলবার মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে ৮টি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার ভিত্তিতেই বুধবার প্রথম ধাপে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পিরোজপুর এলজিইডি অফিসের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসে। সরকারি অর্থের অপচয়, অসম্পূর্ণ প্রকল্পের বিল পরিশোধ এবং ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ ওঠে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং এলজিইডি’র প্রধান কার্যালয় থেকে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রাথমিক অনুসন্ধান চালানো হয়। তদন্তে দেখা যায়, প্রকল্পের কাজ না করেই আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি বিল পরিশোধ করা হয়েছে।
এছাড়াও প্রকল্প ব্যয়ে এক হাজার ১০১ কোটি টাকার গরমিল পাওয়া যায়। এসব অনিয়ম এবং অর্থ আত্মসাতের ঘটনার সাথে পিরোজপুর জেলার হিসাব অফিস ও এলজিইডি’র কর্মকর্তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রমাণ পায়।
তদন্ত শেষে দুদক দুর্নীতির সত্যতা নিশ্চিত করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মামলার বাদী পক্ষের দাবি, এই দুর্নীতিতে জড়িতদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত না করলে ভবিষ্যতে আরও বড় অর্থ কেলেঙ্কারির আশঙ্কা রয়েছে।
পিরোজপুরবাসীর আশা, এই তদন্ত ও গ্রেফতারের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে দুর্নীতির লাগাম টানা সম্ভব হবে এবং সঠিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা যাবে।