রাজনৈতিক আলোচনায় বিএনপির সঙ্গে যুক্ত হবে অন্তর্বর্তী সরকার: আশাবাদ এ্যানির

লক্ষ্মীপুরে প্রতিনিধি নির্বাচন পরিদর্শনে এসে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল খালেদা জিয়ার সঙ্গে আগেই দেখা করা। কিন্তু দীর্ঘ দশ মাসেও সেটি না হওয়া দুঃখজনক। তিনি জানান, সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে কিছু কথাবার্তা হলেও রাজনৈতিক বিষয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে আলাপ হওয়া প্রয়োজন ছিল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি এখনো আশা করে, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যথাসময়ে রাজনৈতিক আলোচনার পথ উন্মুক্ত হবে। তিনি মনে করেন, এটি শুধু বিএনপির নয়, গোটা দেশের গণতান্ত্রিক চেতনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন ভালো মানুষ। তিনি সম্প্রতি লন্ডনে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন, যা দেশের রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা দিয়েছে। এ্যানি মনে করেন, এ ধরনের বৈঠক আরও আগে হওয়া উচিত ছিল, কারণ তারেক রহমান কোনো অবকাশযাপনের জন্য বিদেশে যাননি, বরং রাজনৈতিক প্রতিকূলতার কারণে সেখানে অবস্থান করছেন। বিএনপির মতো একটি বড় দলের সঙ্গে আলোচনায় বসা স্বাভাবিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি বলেন, এই বৈঠক নিয়ে অনেকে সমালোচনা করছেন, অথচ বাস্তবতা হলো – যারা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, জেল খেটেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন – তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হওয়া স্বাভাবিক। লন্ডনের এই আলোচনা ছিল গণতন্ত্রের স্বার্থে, কোনো গোপন চুক্তি নয়।

এ্যানি আওয়ামী লীগের অতীত ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, স্বাধীনতার পর রক্ষীবাহিনী দিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছে, দেশে দুর্নীতি ও দুঃশাসন চালু হয়েছে, যা এখনও চলছে। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ কখনো সাধারণ মানুষের জন্য রাজনীতি করেনি, বরং জুলুম, লুটপাট ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করাই তাদের মূল লক্ষ্য।

তিনি আরও বলেন, জনগণ এখন শুধু পরিবর্তনের অপেক্ষায় নয়, বরং জবাবদিহিতামূলক শাসনব্যবস্থা চায়। এজন্যই মানুষ আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে, যেখানে প্রকৃত গণতান্ত্রিক শক্তির বিজয় হবে।

চরশাহী ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি নির্বাচন পরিদর্শনের সময় জেলা ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন ঘিরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ করা গেছে বলে জানান নেতারা।

প্রতিনিধি নির্বাচনের এই উদ্যোগকে বিএনপি গণতান্ত্রিক চর্চার অংশ হিসেবে দেখছে এবং ভবিষ্যতের আন্দোলন-সংগঠনে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও মনে করছেন দলের সংশ্লিষ্টরা।