হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নোয়াগর গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামে অত্যাচার, দাঙ্গা এবং অবৈধ কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা এক ব্যক্তি, শাহজাহান মেম্বারের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে। শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে নোয়াগর গ্রামবাসীরা আজমিরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন এলাকার বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ মানুষ। তাদের একটিই দাবি, কুখ্যাত সন্ত্রাসী শাহজাহান মেম্বারকে গ্রেফতার করা হোক।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেন, শাহজাহান মেম্বার দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে নোয়াগর গ্রামে এক সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু হত্যা মামলা রয়েছে এবং তিনি সরকারি জলাশয় থেকে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, শাহজাহান মেম্বারকে গ্রেফতার করার জন্য গ্রামবাসী গত ৬ মাস ধরে বিভিন্নভাবে দাবি জানিয়ে আসলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে, অভিযোগ করা হয়েছে, শাহজাহান মেম্বার শুধু হত্যা মামলার আসামী নন, তিনি আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে গ্রামে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি, গ্রামবাসীর কাছে পাওনা টাকার জন্য যখনই তারা তার কাছে যান, তখন তার বাহিনী তাদের উপর হামলা চালায়। সম্প্রতি, গ্রামে তার বাহিনীর হাতে কয়েকজন গ্রামবাসী আহত হয়েছে। পুলিশও যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
নোয়াগর গ্রামবাসীদের অভিযোগ, শাহজাহান মেম্বারের নেতৃত্বে তার বাহিনী গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। তিনি গ্রামের ফান্ড থেকে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে গ্রামবাসীর ওপর শোষণ ও অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন। বক্তারা বলেন, "যত দ্রুত সম্ভব তাকে গ্রেফতার না করলে, গ্রামে সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, যা আরও ভয়াবহ হতে পারে।"
এছাড়া, গ্রামবাসী অভিযোগ করেন, পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো তৎপরতা নেই, যার ফলে শাহজাহান মেম্বার এখনো স্বেচ্ছায় গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গ্রামবাসী ইতোমধ্যে আজমিরীগঞ্জ থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন, তবে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তারা প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এবং শাহজাহান মেম্বারকে গ্রেফতার করার জন্য অনুরোধ জানান।
এ প্রসঙ্গে, আজমিরীগঞ্জ থানার পুলিশ বলছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করছে এবং যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাজ করছে। তবে, গ্রামবাসী আশঙ্কা করছেন, যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে চলে যেতে পারে।