প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৬:৪৫
নওগাঁর নিয়ামতপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নৃশংসভাবে খুন করার ঘটনায় মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসাইন মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ আগস্ট রাতে নিয়ামতপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামে নিজ বাড়িতে স্ত্রী রানী বেগমের কাছে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করেন মোস্তাফিজুর রহমান। দাবিকৃত অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি কাঠের খাটিয়া দিয়ে মাথায় আঘাত করে রানীকে গুরুতর জখম করেন, যা পরে তার মৃত্যুর কারণ হয়।
নিহত রানী বেগম মান্দা উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা আনিসুর রহমান সাকিদারের মেয়ে। ঘটনার পরদিন নিহতের বাবা নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ায় মামলাটি আদালতে গড়ালে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৪ জন এবং আসামিপক্ষ থেকে ২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
সাক্ষ্যপ্রমাণ যাচাই করে বিচারক আসামির দোষ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। একইসঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইকবাল জামিল চৌধুরী লাকি।
রায় ঘোষণার সময় আসামি মোস্তাফিজুর রহমান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহত রানীর পরিবার এবং বাদীপক্ষ।
এই রায়ে নারী নির্যাতন এবং যৌতুকজনিত সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন আইন সচেতন মহল। তারা বলছেন, এ ধরনের কঠোর শাস্তিই সমাজে এমন অন্যায় বন্ধে সহায়ক হতে পারে।
স্থানীয় এলাকায় রায়ের খবর ছড়িয়ে পড়লে জনমনে স্বস্তি ফিরে আসে। তারা আদালতের এই কঠোর রায়কে ইতিবাচক দৃষ্টিতে নিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে বিচার বিভাগের শক্ত অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করছেন।