প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩:৪৯
নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় শীতের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে বসন্তের বাতাস। উপজেলার প্রতিটি এলাকায় এখন আমের গাছগুলোতে ফুটতে শুরু করেছে সুগন্ধী মুকুল, যা জানান দিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্তের আগমন। সুবাসিত মুকুলের গন্ধে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারপাশ, আর এই দৃশ্য দেখে উচ্ছ্বসিত আমচাষীরা।
পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ‘মামার বাড়ি’ কবিতার মতো বাস্তব দৃশ্যায়নের জন্য অপেক্ষা মাত্র কিছুদিনের। আম গাছে মুকুল আসার ফলে আত্রাইয়ের প্রকৃতি যেন নতুন রূপে সেজেছে। মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে, আর কৃষকরাও বাগানের পরিচর্যায় নিয়োজিত রয়েছেন।
এ বছর কৃষিবিদ ও চাষিরা আশাবাদী যে বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের ভালো ফলন হবে। আমচাষিরা গাছে নিয়মিত ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক স্প্রে করছেন এবং গাছের পরিচর্যায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমচাষি মো. মজিদ মন্ডল বলেন, “পুরোপুরি সব গাছে এখনো মুকুল আসেনি, তবে কয়েক দিনের মধ্যেই সব গাছে মুকুল দেখা যাবে। আমি প্রতিবছর আম চাষ থেকে ভালো আয় করি।”
আত্রাইয়ের কৃষি অফিস সূত্র জানায়, এ বছর উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ১২৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ করা হয়েছে। আমরুপালি, ফজলি, খিরসা, মোহনা, ল্যাংড়া, রাজভোগ ও গোপালভোগসহ বিভিন্ন জাতের আমের বাগান গড়ে উঠেছে। স্থানীয় উৎপাদিত আম এলাকার চাহিদা মেটানোর পর রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার জানান, আমের মুকুল আসার আগে এবং আমের গুটি ধরার পর নিয়মিত ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চাষিদের জৈব বালাইনাশক ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি।
এভাবেই নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় আমের মুকুলের সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে, আর বসন্তের বার্তা নিয়ে এসেছে নতুন সম্ভাবনা।