প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২১, ২১:৩৮
শ্রমিকদের উপর হামলায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবীতে বাস শ্রমিকদের অবরোধ অবশেষে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বরিশালের বাস শ্রমিকরা। দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাসে ধর্মঘট তুলে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন লিটন মোল্লা। শুক্রবার (১৬ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার নগরীর রুপাতলী বাস টার্মিনালে শ্রমিকদের মারধরের অভিযোগে দায়ের করা মামলার আসামিদের গ্রেফতার না করায় আল্টিমেটাম শেষে ২য় দফায় আন্দোলনে নামেন বরিশাল সিটি মেয়র অনুসারী বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের শ্রমিকরা।
তারা রুপাতলী ও নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। শুক্রবার সোয়া ১০টার দিকে রূপাতলী বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন গোলচত্বরে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক ও নথুল্লাবাদ টার্মিনালে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ওপর আড়াআড়িভাবে বাস দাঁড় করিয়ে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের নিবৃত্ত করতে পারেনি তারা। ফলে লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় দিনেও সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হতে হয় সাধারণ যাত্রীদের।
তবে শুক্রবার বেলা সোয়া ১টার দিকে অবরোধ তুলে নেয়া নেওয়া হয়। বরিশাল জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি কামাল হোসেন লিটন মোল্লা জানান, পুলিশ কমিশনারের সাথে তাদের আলাপ হয়েছে।
তিনি দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার আসামীদের গ্রেফতারের কথা জানিয়েছেন। তাঁর আশ্বাসেই অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন বাস শ্রমিকরা।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) লকডাউন শিথিলের প্রথম দিনে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড এবং শ্রমিক ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বরিশাল সদর আসনের এমপি ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী অনুসারী এবং বরিশাল সিটি মেয়র অনুসারী দুই গ্রুপ শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হামলার অভিযোগ তুলে সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ শুরু করেন বাস শ্রমিকরা। হামলাকারীদের গ্রেফতারের আশ্বাস পেলে ৪ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর পুনরায় বাস চলাচল শুরু হয়। পাশাপাশি এমপি অনুসারী শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি সুলতান মাহমুদ সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন অপর অংশের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ শাহরিয়ার বাবু।
বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি সুলতান মাহমুদ বলেন, মহামারি করোনার কারনে নির্বাচন না হলেও সদর আসনের সাংসদের ডিও লেটারে আমাদের কমিটি সম্প্রতি অনুমোদন পেয়েছে। আর মুলত যারা ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে নিচ্ছে তারা একটি অবৈধ কমিটির হয়ে আমাদের স্ট্যান্ড দখল নিতে চায়।
তিনি বলেন, ওই কমিটির নেতা পরিমল চন্দ্র দাস ও শাহারিয়ার বাবু এখানকার কোনে বাসের শ্রমিকই নন। অথচ গঠনতন্ত্র অনুসারে শ্রমিক ছাড়া শ্রমিক ইউনয়নের কমিটি গঠন অবৈধ।
বরিশাল জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ ও মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক আহম্মদ শাহরিয়ার বাবু বলেন, রুপাতলী শ্রমিক ইউনিয়নে ২৩ বছর ধরে চাঁদাবাজি দখলদারিত্ব করে আসছিলো সুলতান মাহমুদ। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিতে মাননীয় মেয়র মহোদয় নতুন কমিটি গঠনকরে দিয়েছে।
তিনি বলেন, সেই কমিটি উৎখাত করতে আজ সকালে অতর্কিতভাবে বাসস্ট্যা-ে এসে হামলা চালায় সুলতান মাহমুদের লোকজন। এতে আমাদের লাইন সম্পাদক হান্নান মৃধা, মালিক সমিতির সিনিয়র সহ সভাপতি নাছির মৃধাসহ কমপক্ষে ৪ জন শ্রমিক আহত হয়। তাদের একটাই দাবি সন্ত্রাসী সুলতান মাহমুদকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।