দিনাজপুরের হাকিমপুর হিলি উপজেলার মাঠজুড়ে এখন কৃষকদের চরম হতাশা। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া এবং বৈরী আবহাওয়ার কারণে পাকা আমন ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। ফলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন স্থানীয় হাজারো কৃষক। যাদের সারা বছরের স্বপ্ন, শ্রম আর ঘাম মিশে আছে এই ধানের মাঠে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের ধানক্ষেতে পানি জমে গেছে। ঝড়ো হাওয়ায় ধানের গাছ শুয়ে পড়েছে মাটির সঙ্গে। এতে ধান কেটে ঘরে তোলা যেমন কষ্টকর, তেমনি শুকাতে না পারলে পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
১নং বোয়ালদাড় ইউনিয়নের কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, “ধান কাটা শুরু করতেই বৃষ্টি আর বাতাস শুরু হলো। ধান কেটে ঘরে তুলতে গেলে খরচ বেড়ে যাবে। আবার ঠিকমতো শুকাতে পারছি না, ফলে দানা কালো হয়ে যেতে পারে।”
একই এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম বলেন, “যদি দ্রুত রোদ না ওঠে, তাহলে ধান শুকানো সম্ভব হবে না। ভেজা ধান ঘরে তুললে তা পচে যাবে। বাজারে সে ধান কেউ কিনবে না। ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক হবে।”
আরেক কৃষক শুভ জানান, তাদের পরিবারের বেঁচে থাকার নির্ভরতা এই ধান ফসলের উপর। “এই ধান বিক্রি করে ঋণ শোধ, সন্তানদের খরচ, সংসার চালাই। এখন যদি আবহাওয়া অনুকূলে না থাকে, সব শেষ।”
তিনি আরও বলেন, “এ বছর ফলন খুব ভালো হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এই বৃষ্টি আর বাতাসে পুরো পরিস্থিতি বদলে গেল।”
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরজেনা বেগম জানান, “বৈরী আবহাওয়ার কারণে কিছু এলাকায় ধানের ক্ষতি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন। কৃষকদের দ্রুত কাটাই, ঝাড়াই ও শুকানোর বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।”
কৃষকেরা এখন শুধু একটি জিনিসই চায় — আকাশ পরিষ্কার হোক, সূর্য উঠুক। কারণ তাদের সারা বছরের পরিশ্রম, পরিবার ও ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই কয়েক দিনের আবহাওয়ার উপর।