ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের গণপিটুনিতে নিহত মাসুদ কামাল তোফাজ্জলকে বরগুনার পাথরঘাটায় তার পরিবারের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টার দিকে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তার নানাবাড়ি উপজেলার শতকর এলাকায়, পরে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তালুকের চরদুয়ানি তালিমুল কোরআন মাদ্রাসা মাঠে।
তোফাজ্জলের জানাজায় অংশ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হয়। তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও ঘৃণার ছাপ স্পষ্ট দেখা গেছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের হাতে তার এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে হতবাক হয়েছেন তার নিজ গ্রামের বাসিন্দারা। জানাজা শেষে হত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় চরদোয়ানি বাজারের প্রধান সড়কে।
মানববন্ধনে উপস্থিত সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এনামুল হোসাইন বলেন, “দুই রাত আমি ঘুমাতে পারিনি, তোফাজ্জলের মুখের স্মৃতি চোখে ভাসে। আমি নিজে তার চিকিৎসা করেছি। এ ধরনের ঘটনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে ভাবতে পারি না।” তিনি আরও জানান, তোফাজ্জল তার নিকটাত্মীয় নন, তবুও তার জন্য অন্তরের টান অনুভব করেন।
তোফাজ্জলের মামাতো বোন তানিয়া বলেন, “আমি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। তারা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেছে এবং মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত হলে মূল রহস্য বেরিয়ে আসবে।”
গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নির্মম নির্যাতনের পর গণপিটুনিতে নিহত হন মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল। তার মরদেহ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে পাথরঘাটার নিজ গ্রামে নিয়ে আসা হয়।
এই ঘটনার পর থেকে সারা দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। শিক্ষার্থীদের মাঝে নিরাপত্তাহীনতা এবং গণপিটুনির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কত দ্রুত ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে এই ঘটনার তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।