বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী জেলা মেহেরপুর। এ জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষি নির্ভরশীল। ৩টি উপজেলা নিয়ে গঠিত মেহেরপুর জেলার প্রায় ৬০ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ভারতীয় সীমান্ত রয়েছে। সীমান্তের পুরোটা অংশজুড়ে কাঁটাতারের বেড়া দুই দেশকে আলাদা করে রেখেছে।
দুই দেশের সীমান্তে কৃষি কাজেও কাঁটাতারের বেড়া বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এপার বাংলায় তথা বাংলাদেশ অংশে নোম্যান্সল্যান্ডে রয়ে গেছে ভারতীয় নাগরিকদের শত শত একর জমি। সেই জমি লিজ নিয়ে এখন চাষাবাদ করছেন সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশী কৃষকেরা।
মেহেরপুরের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী গ্রাম ঘুরে জানা যায়, ওপারের তথা ভারতের নদীয়া জেলার অসংখ্য মানুষের শত শত একর জমি এখন রয়েছে সীমান্তের এপারে বাংলাদেশের মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর অংশে। তাই সীমান্ত পেরিয়ে চাষাবাদ ভারতীয়দের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলস্বরূপ ভারতীয়রা এখন এসব জমি বাংলাদেশীদের নিকটে লিজ দিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি বছর লিজের টাকা নিয়ে ভারতীয়রা এসব জমি বাংলাদেশীদের আবাদ করতে দিচ্ছে বলে জানান সীমান্তের কৃষকেরা।
ভারতীয়রা যেমন তাদের অনাবাদি জমির মূল্য ও দখল সুবিধা পাচ্ছে; ঠিক তেমনি আবার বাংলাদেশিরা কম টাকায় এসব জমি লিজ নিয়ে কোটি টাকার ফসল উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে।
নিরাপদে সীমান্তের এসব জমি চাষাবাদে সহযোগিতা করছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। কৃষি বিভাগ ও বিজিবির হিসেবে ভারতীয়দের কয়েক হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদ করছেন বাংলাদেশীরা।
জেলার গাংনী উপজেলার কাজিপুর সীমান্তে ভারতীয়দের ১৭ বিঘা জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করেন কৃষক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, স্বল্প টাকায় লিজ নিয়ে চাষাবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছি।
গাংনীর সহড়াতলা সীমান্তে ভারতীয় জমি লিজ নিয়ে গম চাষ করছেন আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, চাষবাস করতে কোন অসুবিধা হয়না। দুইদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী খুব সহোযোগিতা করে।
বিজিবি'র কাজিপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার আনজু হোসেন বলেন, আমরা সবসময় কৃষকদের সহোযোগিতা করে আসছি। নোম্যান্সল্যান্ডের জমিজমা বাংলাদেশী কৃষকেরা চাষাবাদ করতে গিয়ে সবটুকু নিরাপত্তা তারা নিয়মিত পাচ্ছে। বিজিবি ও বিএসএফ সম্মিলিত ভাবে কৃষকদের চাষাবাদের সুযোগ দিয়েছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার বলেন, সীমান্তে ভারতীয় জমি লিজ নিয়ে চাষ করে মেহেরপুরের কৃষকরা ব্যাপক সাফল্য পাচ্ছেন। এতে অর্থনীতির দিক থেকেও আমরা বেশ লাভবান হচ্ছি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।