সিলেটে আমন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ৫ই জানুয়ারী ২০২৩ ০৫:১২ অপরাহ্ন
সিলেটে আমন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয়

চলতি মৌসুমে সরকারি আমন সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। সংগ্রহের সময় গড়াতে থাকলেও সামান্য পরিমাণই ধান ও চাল সংগ্রহ করতে পেরেছে খাদ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগ।


এ অবস্থায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সংশয় দেখা দিতে পারে। তাই মাঠ প্রশাসন ও মাঠ পর্যায়ের খাদ্য কর্মকর্তাদের আমন সংগ্রহ জোরদারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।


খাদ্যের মজুত গড়ে তুলতে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সরকারের সংগ্রহের বড় একটি অংশ আমন থেকে করতে চাচ্ছে সরকার। সংকটকালে বাজার নিয়ন্ত্রণে এই মজুত সরকারের অন্যতম হাতিয়ার। একই সঙ্গে কৃষককে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাও এই সংগ্রহের অন্যতম উদ্দেশ্য। 


আমন ধান ভালো উৎপাদনের পরেও খাদ্য অধিদপ্তরে চাল দিচ্ছেন না মিল মালিকরা। বিভিন্ন কৌশল ও নানান অজুহাতে শেষ পর্যন্ত চাল দিতে চুক্তির আওতায় আসেননি অনেকে। পর্যাপ্ত ধান-চাল সংগ্রহে সরকার এবার দাম বাড়ালেও ধান দেয়ায় অ্যাপস ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত ঝামেলার কারণে কৃষকদের মধ্যে অনিহা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিতে পারে।


চলতি মৌসুমে খাদ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগে ২০ হাজার টন ধান ও ১৩ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। বুধবার পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৬০ টন ও চাল সংগ্রহের চুক্তি হয়েছে ৮ হাজার টন। দেড় মাসেরও বেশী সময়ে এই সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। যদিও খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্দিষ্ট সময়ের আগে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে এবং ধান সংগ্রহও লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছবে।


জানা যায়, চলতি মৌসুমে খাদ্য অধিদপ্তর সিলেট জেলায় ৪ হাজার টন ধান ও সাড়ে ৩ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। বিপরীতে গতকাল বুধবার পর্যন্ত জেলায় ৩০০ টন ধান সংগ্রহ ও ১ হাজার ৭০০ টন চাল সংগ্রহের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।


সুনামগঞ্জ জেলায় ৩ হাজার ৮৪৩ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গতকাল বুধবার পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ৪৫ টন। ২ হাজার ৭২৪ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চুক্তি হয়েছে ২ হাজার ৪৮৩ টন। সংগ্রহ হয়েছে ২৪৫ টন।


মৌলভীবাজার জেলায় ৫ হাজার ৫৩৯ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গতকাল পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২০ টন। ৩ হাজার ২৩৫ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ মাত্র ২৪০ টন।


হবিগঞ্জ জেলায় ৪ হাজার ৪৯৬ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৬ টন। ৩ হাজার ৪৬৪ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চুক্তি হয়েছে ২ হাজার ৭৪ টন।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক এবারের আমন মৌসুমের (২০২২-২৩) ধান-চাল সংগ্রহের সময়সীমা ১৭ নভেম্বর থেকে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এ প্রেক্ষাপটে ৫ লাখ টন চাল ও ৩ লাখ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। কিন্তু গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ধান সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৫০০ টন। দেশের হাট-বাজারে ধান কেনার উপযুক্ত সময় প্রায় শেষের দিকে। অথচ সরকারের গুদামে ধান দেননি কৃষক।


খাদ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাইন উদ্দিন বলেন, চলতি মৌসুমে বাজারে ধান ও চালের ভালো দাম। তাই কৃষকের ধান দিতে আগ্রহ কম। ধান সংগ্রহ কম হলেও আমরা চাল সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবো। এছাড়া বর্তমানে সিলেট বিভাগে সরকারি গুদামে ৬০ হাজার টন চাল মজুদ আছে।