মালয়েশিয়ায় রাষ্ট্রপতির ‘সেকেন্ড হোম’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টার যে মন্তব্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
মোঃ সাইফুল ইসলাম, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশিত: সোমবার ৯ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:২৪ অপরাহ্ন
মালয়েশিয়ায় রাষ্ট্রপতির ‘সেকেন্ড হোম’: পররাষ্ট্র উপদেষ্টার যে মন্তব্য

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম নেওয়ার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা ও বিতর্ক চলছে। বিষয়টি জনমনে কৌতূহল তৈরি করেছে এবং বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে এ ধরনের সিদ্ধান্ত সাংবিধানিকভাবে সম্ভব কিনা। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন তার মতামত জানান।


সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, রাষ্ট্রপতির মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম নেওয়ার উদ্যোগ সম্পর্কে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত কিনা এবং এই বিষয়ে ডকুমেন্ট যাচাই-বাছাই করার কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা। এর জবাবে মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, "এটি একটি সংবেদনশীল বিষয় এবং এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।"


তিনি আরও উল্লেখ করেন, "পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এরসঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কাজ করতে পারবে না। অনুমান বা স্পেকুলেশনের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয়।" তিনি স্পষ্ট করেন যে, এই ধরনের বিষয়গুলি সংবেদনশীল এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আওতার বাইরে।


বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমন আলোচনা তুঙ্গে, তেমনি রাষ্ট্রপতির পদে থেকে এমন পদক্ষেপের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। রাজনৈতিক মহল ও বিশেষজ্ঞদের মতে, রাষ্ট্রপতির সেকেন্ড হোম নেওয়ার বিষয়ে পরিষ্কার দিকনির্দেশনা প্রয়োজন এবং জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর করার জন্য এ বিষয়ে একটি স্বচ্ছ বিবৃতি প্রদান করা উচিত।


অন্যদিকে, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম প্রোগ্রামের আওতায় সাধারণত ধনী ব্যক্তিরা বিনিয়োগের মাধ্যমে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ পেয়ে থাকেন। রাষ্ট্রপতির মতো উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা এ ধরনের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে পারেন কিনা তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এ ধরনের উদ্যোগ সংবিধান ও রাষ্ট্রের স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে পারে। 


মালয়েশিয়ার ‘মাই সেকেন্ড হোম’ (MM2H) প্রোগ্রামটি সারা বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের জন্য জনপ্রিয়। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিদেশি নাগরিকরা নির্দিষ্ট বিনিয়োগের শর্তপূরণ করে দেশটিতে দীর্ঘমেয়াদী বসবাসের সুযোগ পেয়ে থাকেন। তবে, একজন রাষ্ট্রপতির এ ধরনের প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ কতটা যুক্তিসঙ্গত তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক।


রাষ্ট্রপতির পদে থেকে এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া কোনোভাবে দেশের জনগণের মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্য সরবরাহ করা গুরুত্বপূর্ণ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য না দেওয়ায় বিতর্ক আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 


বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যম এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। রাষ্ট্রপতির অফিস থেকে এ বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া না গেলেও জনমনে এটি নিয়ে কৌতূহল ও উদ্বেগ বাড়ছে। 


পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এ বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট অবস্থান এবং তথ্য প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে, যাতে করে জনগণের মধ্যে সৃষ্ট বিভ্রান্তি দূর হয়।