প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭:২৯
চলমান জেলা প্রশাসক সম্মেলনে জননিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনায় ১১টি লিখিত প্রস্তাব দিয়েছেন জেলা প্রশাসকেরা। তাদের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে জেলা প্রশাসকের অধীনে বিশেষ প্রতিক্রিয়া দল গঠন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য বাধ্যতামূলক বডি ক্যামেরা ব্যবহার এবং জননিরাপত্তায় মারণাস্ত্র ও ছররা গুলি নিষিদ্ধ করার সুপারিশ।
রোববার থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে মঙ্গলবার জননিরাপত্তা বিভাগ-সম্পর্কিত কার্য অধিবেশন হওয়ার কথা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা, উচ্ছেদ অভিযানসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এ ধরনের কাজ নির্বিঘ্ন করতে একটি বিশেষ প্রতিক্রিয়া দল গঠনের প্রস্তাব করেছেন মাগুরার জেলা প্রশাসক।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জরুরি পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা পেতে সময়ক্ষেপণ হয়, যা সরকারি কার্যক্রম ব্যাহত করে। তাই জেলা প্রশাসকের অধীনে ১০ থেকে ১৫ সদস্যের একটি ‘স্পেশাল ডেডিকেটেড রেসপন্স ফোর্স’ গঠন করা হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ সহজ হবে।
গাইবান্ধা ও সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসকরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে প্রতিবেদন দেওয়ার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। তারা মনে করেন, জননিরাপত্তা বিভাগের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করে এই প্রতিবেদন গোপনীয়ভাবে জমা দেওয়া যেতে পারে।
এছাড়া, পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বাড়াতে নিয়োগ কমিটিতে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি রাখার সুপারিশ করেছেন মাগুরা ও মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক। অপরাধ ও জাতীয় পরিচয়ের তথ্যভান্ডারে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রবেশাধিকার দেওয়ারও প্রস্তাব এসেছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত আইন সংশোধন এবং কিছু ধারায় অর্থদণ্ডের পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক। তিনি দণ্ডবিধির কিছু ধারায় সর্বনিম্ন অর্থদণ্ড ১ হাজার এবং সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
নরসিংদী জেলার ছয়টি চরাঞ্চল ইউনিয়ন নিয়ে পৃথক থানা গঠনের সুপারিশ করেছেন নরসিংদীর জেলা প্রশাসক। জেলা পর্যায়ে স্থায়ী প্রসিকিউশন ইউনিট গঠন এবং নিবন্ধন অধিদপ্তরকে আইন মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনার মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবও আলোচনায় এসেছে।
জেলা প্রশাসকদের এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। সম্মেলনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।