রামপুরায় ছাত্রকে গুলি করা সেই পুলিশ পরিদর্শক চঞ্চল সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থানা থেকে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর হাসান জোহা’র নেতৃত্বে একটি টিম দীঘিনালা থানা পুলিশের সহযোগিতায় রবিবার রাত ১০টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। জানা গেছে, চঞ্চল সরকার দীঘিনালা থানায় ২০২৪ সালের ৭ নভেম্বর উপ-পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে যোগদান করেন। তবে রামপুরায় ঘটে যাওয়া ঘটনার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রামপুরায় একজন ছাত্র ছাদে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় চঞ্চল সরকার তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালান। এ ঘটনার তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা চিহ্নিত হওয়ার পর দীর্ঘ নজরদারি চালিয়ে খাগড়াছড়িতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে আটক করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া অ্যাটর্নি জেনারেল তানভীর হাসান জোহা জানিয়েছেন, তাকে গ্রেফতারের পরপরই স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইন্সুরেন্সার পিনাকী ভট্টাচার্য একটি পোস্টে এ গ্রেফতারের ঘটনা উল্লেখ করেন। তিনি লেখেন, “মনে আছে রামপুরায় ছাদে ঝুলে লুকিয়ে থাকা ছাত্রকে গুলি করার সেই এসআই চঞ্চল সরকার? তাকে আইডেন্টিফাই করার পর ধাওয়া দিয়ে ধরা হয়েছে খাগড়াছড়িতে। এই গ্রেফতার একটি অবিশ্বাস্য গোয়েন্দা কার্যক্রমের ফলাফল।”
এদিকে দীঘিনালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাকারিয়া জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের টিম দীঘিনালায় এসে আমাদের সহযোগিতায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। তাকে ট্রাইব্যুনালের কাছে হস্তান্তর করে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে এবং আদালতে তার বিচার হবে।
প্রসঙ্গত, এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভ্যন্তরে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি আরও একবার সামনে এসেছে। সরকারের বিশেষায়িত টিমের সফল অভিযানের ফলে গ্রেফতার নিশ্চিত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ধন্যবাদ পেয়েছেন।
এ ঘটনাটি গোটা দেশের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন গ্রেফতার সাধারণ মানুষের মনে আইনের প্রতি আস্থা আরও বাড়াবে। একই সঙ্গে অপরাধ দমনে গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
গ্রেফতার হওয়া চঞ্চল সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা হুমকিতে ফেলেছিলেন। এ ধরনের ঘটনার কঠোর বিচার নিশ্চিত করলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ সম্ভব হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
এই গ্রেফতার প্রমাণ করে, দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত কেউ অপরাধে জড়ালে বা ক্ষমতার অপব্যবহার করলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। এটি সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এক গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হিসেবে পরিগণিত হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।