নোয়াখালীতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আগুনে পুড়ে মারা গেল গরু

নিজস্ব প্রতিবেদক
গিয়াস উদ্দিন রনি- জেলা প্রতিনিধি , নোয়াখালী
প্রকাশিত: রবিবার ২৬শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৪:২০ অপরাহ্ন
নোয়াখালীতে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটে আগুনে পুড়ে মারা গেল গরু

নোয়াখালী জেলার কবিরহাট উপজেলায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুনে তিনটি গরু পুড়ে মারা গেছে। এই ঘটনায় আরো দুটি বাছুর আহত হয়েছে। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, শনিবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে সুন্দলপুর ইউনিয়নের সুন্দলপুর গ্রামে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক, যার মধ্যে তিনটি গরুর মৃত্যু এবং অতিরিক্ত আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কৃষক পরিবারটি।  


ঘটনার দিন রাতে কৃষক জাহাঙ্গীর তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাবার খেয়ে ঘুমাতে যান। রাত ৯টার দিকে, তিনি গোয়ালঘরে মশার কয়েল দিতে বের হয়ে দেখেন, গোয়ালঘরে আগুন লেগে গেছে। মুহূর্তে গোয়ালঘরের পুরো জায়গা জ্বলে ওঠে এবং আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার সাথে সাথে দ্রুত আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু করেন। তবে ততক্ষণে আগুনে তিনটি গরু পুড়ে মারা যায় এবং দুটি বাছুরও আহত হয়।  


কৃষক নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, তিনি তার বসতঘর থেকে একটি বৈদ্যুতিক লাইন গোয়ালঘরে দিয়েছিলেন, যা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের ফলে আগুনের কারণ হিসেবে জানা গেছে। গরুর গোয়ালঘরের এক পাশে শুকনা লাড়কি স্তুপ করা ছিল, যা আগুনের তীব্রতা বাড়িয়ে দেয় এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে।  


এ বিষয়ে কবিরহাট উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শাহজালাল জানান, কৃষক জাহাঙ্গীরের সাথে কথা বলার পর জানা গেছে, অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনটি গরুর মৃত্যু এবং ক্ষতিগ্রস্ত বাছুরদের চিকিৎসা খরচ মেটানো কৃষকের জন্য বেশ কঠিন হবে।  


স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা আরও রোধ করতে হলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা জরুরি। বিদ্যুৎ লাইনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকলে এমন বিপদের সম্মুখীন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। গোয়ালঘরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।  


এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা কেবল কৃষক পরিবারের জন্যই দুঃখজনক নয়, পুরো এলাকার জন্য এক বিরাট ক্ষতি। গরু এবং অন্যান্য প্রাণী কৃষকের আয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তাই তাদের ক্ষতি মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। স্থানীয়রা আশা করছেন, প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।  


এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন এবং পশু চিকিৎসকরা আহত বাছুরদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছেন। তবে পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে এবং এ ধরনের বিপদের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও সতর্কতা অবলম্বন করার কথা জানানো হয়েছে।  


এতে করে কৃষকদের জন্য শীঘ্রই নতুন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। কৃষক পরিবারটির জন্য এই মুহূর্তে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন, যা তাদের ক্ষতি কমিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে।  


এই ঘটনাটি আবারো প্রমাণ করল, যে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুন অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে যেখানে জীবিকা হিসেবে গবাদি পশু পালিত হয়। সচেতনতা এবং সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এমন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।  


এছাড়া, স্থানীয় প্রশাসন থেকে কৃষকদের প্রতি আরও সহযোগিতা এবং সুরক্ষা প্রদান করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।