গাজীপুরে মাদরাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি , গাজীপুর
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১০ই অক্টোবর ২০২৪ ০৩:৪২ অপরাহ্ন
গাজীপুরে মাদরাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ

গাজীপুর মহানগরীর পূবাইল রহমানিয়া আলিম মাদরাসার চার শিক্ষক বিরুদ্ধে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছে, দাবি জানিয়ে বলেছে অভিযুক্ত শিক্ষকদের অপসারণ এবং শাস্তির। অভিযুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন আনিছুর রহমান, ফজলুর রহমান, তোফাজ্জল হোসেন ও শেখ শহিদুল ইসলাম।


বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকালে শিক্ষার্থীরা নগরীর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের হাড়িবাড়ির টেক এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা 'লুচ্চা' বলে অভিযুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। ঘটনার পর এক শিক্ষকের গা ঢাকা দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে, বাকিরা ক্লাস থেকে বিরত রয়েছেন।


শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানান, মান-সম্মানের ভয়ে তারা তাদের সন্তানদের ক্লাসে আসতে দিচ্ছেন না। একজন অভিভাবক বলেন, “আমার মেয়ে অভিযোগ করেছে। আমি বিষয়টি মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন শিক্ষকেরা কীভাবে চাকরি পান?”


অন্য এক ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, “অভিযুক্তরা আমাদের এলাকার বদনাম করছেন এবং আমার মেয়ের গায়ে হাত দেওয়ার মতো অপকর্ম করেছেন। আমি এদের বিচার চাই।” 


এ ঘটনায় পূবাইল থানার ৪১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার দেওয়ানকে আহ্বায়ক করে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তদন্ত কমিটিতে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, এবং কমিটি আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে প্রস্তুত।


তদন্ত কমিটির প্রধান আনোয়ার দেওয়ান জানিয়েছেন, “সাত কর্মদিবসে রিপোর্ট দেওয়ার কথা থাকলেও পূজার ছুটির কারণে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।” মাদরাসার কোয়াব সদস্য মেজবাহ উদ্দিন মেজু বলেন, “আমরা তদন্ত করে রিপোর্ট দেব, এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।”


অভিযুক্ত শিক্ষক আনিছুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমার নাম আগে বলা হয়নি। অন্য তিনজনের নাম উঠেছে। আমি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।” 


মাদরাসার অধ্যক্ষ কুতুবউদ্দিন বলেন, “যদি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়, তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 


অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি সোহেল রানা বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ ঘটনার প্রেক্ষিতে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।