হ্যান্ডকাপসহ পালিয়ে যাওয়া ওসির সোর্স সাইকুল ইসলাম দুই সহোদরসহ কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক
জেলা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২১শে নভেম্বর ২০২৪ ০৫:৫৯ অপরাহ্ন
হ্যান্ডকাপসহ পালিয়ে যাওয়া ওসির সোর্স সাইকুল ইসলাম দুই সহোদরসহ কারাগারে

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর থানার পুলিশ এ্যাসল্ট মামলায় আলোচিত মাদক ও চোরাকারবারি সাইকুল ইসলামসহ তার দুই সহোদরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হ্যান্ডকাপসহ পুলিশের কাছ থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সাইকুল ইসলাম ও তার সহোদরদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছিল। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) তাদের আদালতে হাজির করা হলে, আদালত তাদের জামিন আবেদন নাকচ করে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বিশ্বম্ভরপুর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৪ অক্টোবর রাতে সীমান্তবর্তী শিলডুয়ারের চান্দের বাজার থেকে সাইকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর পুলিশ তাকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল, কিন্তু পথে স্থানীয় একদল দুর্বৃত্ত পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে সাইকুলকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। হামলায় ১০০ থেকে ১৫০ জন লোক জড়িত ছিল বলে পুলিশ জানায়।

অভিযুক্ত সাইকুল ইসলাম, তার সহোদর ইয়াকুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান তাজ্জুত আলীর ছেলে। তাজ্জুত আলী, যিনি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চোরাকারবারি ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তার পরিবারের সদস্যরা এমনই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।

সাইকুল ইসলাম, যিনি পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত ছিলেন, সীমান্ত চোরাচালান, মাদক, ও বিভিন্ন ধরনের অবৈধ পণ্যের কারবারে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও মারামারির মামলা রয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সাইকুল তার সোর্স পরিচয়ে পুলিশ এবং বিজিবির কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদায় করতো।

বিশ্বম্ভরপুর থানার নবাগত ওসি কাউছার আলম যোগদানের পর থেকে সাইকুলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্থানীয়রা বারবার অভিযোগ জানিয়েও পুলিশি সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

এদিকে, সাইকুলের সহোদররা সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান এবং মাদক ব্যবসা পরিচালনা করত, যা এলাকায় বিপুল পরিমাণ সমস্যার সৃষ্টি করেছে। তাদের গ্রেফতার সুনামগঞ্জের পুলিশ কর্তৃপক্ষের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে বর্তমানে এই তিনজন কারাগারে আছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।

এ ঘটনায় আরও তদন্ত করা হচ্ছে এবং পুলিশ এসব চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।