গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ, তাঁদের মৃত্যু নির্যাতনের কারণে হয়েছে। তবে পুলিশ দাবি করছে, গ্রেপ্তারের পর আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ার কারণে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মৃত্যু হয়।
মৃতদের মধ্যে একজন হলেন সাঘাটা উপজেলার গোবিন্দী এলাকার রোস্তম আলীর ছেলে সোহরাব হোসেন আপেল (৩৫) এবং অন্যজন হলেন একই এলাকার মালেক উদ্দিনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৫)। গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে সাঘাটা এলাকা থেকে এ দুইজনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন সাঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট (৪৫), সেরায়েত আলীর ছেলে সাহাদৎ হোসেন পলাশ (৪৫), এবং শফিকুল ইসলামের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম রকি (২৮)।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার ভোররাতে সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দী গ্রামে যৌথ বাহিনী অভিযান চালায় এবং ইউপি চেয়ারম্যান সুইটসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পরই তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। তাদের পাঁচজনকেই সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে শফিকুল ইসলাম ও রিয়াজুল ইসলামকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে এবং মোশারফ হোসেন সুইট, সোহরাব হোসেন আপেল, ও শাহাদাৎ হোসেন পলাশকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। শফিকুল ইসলাম সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শজিমেক হাসপাতালে এবং সোহরাব হোসেন আপেল দুপুরে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে মারা যান।
সোহরাব হোসেন আপেলের স্ত্রী অভিযোগ করেন, তার স্বামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। রাতে গ্রেপ্তারের পর পিটিয়ে তাকে গুরুতর আহত করা হয়, যার ফলে দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুব হোসেন বলেন, আহতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়। আরএমও ডা. আসিফুর রহমান জানান, মৃত্যু অপ্রত্যাশিত হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ (অ্যাডমিন অ্যান্ড ফিন্যান্স) ইবনে মিজান বলেন, গ্রেপ্তারের পর তারা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাদেরকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তাদের অবস্থার অবনতি হলে তিনজনকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল এবং দুইজনকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে শজিমেক হাসপাতালে শফিকুল এবং গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে আপেলের মৃত্যু হয়। বাকি তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুস্থ রয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।